—প্রতীকী চিত্র।
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কালনা ২ ব্লকের অকালপৌষ পঞ্চায়েতের কুতুবগ্রামে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলল সিপিএম। স্থানীয় সিপিএম নেতাদের দাবি, শাসক দলের এক নেতা ও ওই প্রকল্পের দু’জন সুপারভাইজ়ার শনিবার গ্রামবাসীর একাংশের কাছে ‘মুচলেকা’ দিয়ে দুর্নীতির কথা স্বীকার করে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, জোর করে ‘মুচলেকা’ দিতে বাধ্য করা হয়েছে ওই তিন জনকে। ওই তৃণমূল নেতা কালনা থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও করেছেন।
সিপিএম নেতাদের দাবি, ওই প্রকল্পের ওয়েবসাইট মারফত তাঁরা সম্প্রতি জানতে পারেন, এলাকার তৃণমূল নেতা আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা বেগম ২০১৮ সালে মজুরি বাবদ ১৮,৫০০ টাকা পেয়েছেন। ২০১৯ সালে মজুরি বাবদ তাঁরা পেয়েছেন ৫,৩৪৮ টাকা। অথচ, এলাকার যাঁরা ওই প্রকল্পে কাজ করেন, তাঁরা দাবি করেছেন, ওই দম্পত্তি একশো দিন প্রকল্প কোনও কাজ করেননি। এ ছাড়া, এলাকায় ওই প্রকল্পের তিন সুপারভাইজ়ার ২০১৬ সাল থেকে মজুরি বাবদ প্রায় ৬৯ হাজার টাকা তুলেছেন। শাসক দলের লোকজনের মদতেই মোট ৯২,৮৫৩ টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ সিপিএম নেতাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন ওই তৃণমূল নেতা এবং দু’জন সুপারভাইজ়ারকে ডেকে পাঠান গ্রামের কিছু মানুষজন। কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তথা স্থানীয় সিপিএম নেতা কাজী নুরুল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘এলাকাবাসী তৃণমূল নেতা ও দুই সুপারভাইজ়ারের কাছে গোটা বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তাঁরা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। মাথা নিচু করে নিজেদের দোষ স্বীকার করে তাঁরা মুচলেকা দিয়ে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, শাসক দলের মদত ছাড়া, এই ‘দুর্নীতি’ ঘটতে পারে না। এ দিন সিপিএমের তরফে গ্রামে একটি মিছিলও করা হয়।
আব্দুল মালেক অবশ্য পরে দাবি করেন, কিছু লোকজন জোর করে তাঁকে ‘মুচেলেকা’ দিতে বাধ্য করেছে। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, সিপিএমের কিছু লোক তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে জোর করে দুর্নীতির বিষয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়েছে। তাঁর দাবি, একটি রাস্তা তৈরির কিছু ‘স্কিলড লেবার’-এর মজুরি তিনি নিজের অ্যাকাউন্টে রেখেছিলেন। পরে তা ঠিকাদারকে দিয়ে দেন। তৃণমূল পরিচালিত অকালপৌষ পঞ্চায়েতের প্রধান বিজয় পাত্রের বক্তব্য, ‘‘কোনও দুর্নীতি হয়নি। রাস্তা তৈরির শ্রমিকের টাকা মাস্টাররোল করে কারও না কারও মাধ্যমে ঠিকাদারের হাতে তুলে দিতে হয়। আব্দুল মালেক সেটাই করেছিলেন। সুপারভাইজ়ারেরাও কোনও দুর্নীতি করেননি।’’
তৃণমূলের কালনা ২ ব্লক সভাপতি প্রণব রায়ের অভিযোগ, ‘‘ঘোলা জলে মাছ ধরার জন্য বিরোধীরা মানুষকে খেপানো শুরু করেছে। আমাদের এক নেতা এবং প্রকল্পের দুই সুপারভাইজ়ারকে জোর করে মুচলেকা দেওয়ানো হয়েছে।’’