পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে সাংবাদিক বৈঠক করছেন মহম্মদ সেলিম। নিজস্ব চিত্র
সীমানা দিয়ে দুষ্কৃতী ঢুকিয়ে ভোট লুটের পরিকল্পনা করছে তৃণমূল। মঙ্গলবার রানিগঞ্জে এসে এ ভাবেই অভিযোগ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। যদিও, সেলিমের মন্তব্যে আমল দেয়নি তৃণমূল।
পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে রানিগঞ্জে এসেছিলেন সেলিম। সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস অভিযোগ তোলার পাশাপাশি, ভোট লুটের আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনির মতো সীমানা এলাকায় ও-পার থেকে মাফিয়া-সহ অন্য দুষ্কৃতীদের ভোট লুটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
পাশাপাশি, তৃণমূল-বিজেপি আঁতাঁতের অভিযোগও করেন সেলিম। সম্প্রতি দুর্গাপুর-ফরিদপুরে সিপিএম প্রার্থী, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে এক যোগে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও, অভিযোগ মানেনি ওই দুই দল। তবে ওই অভিযোগে তৃণমূল কর্মী ও বিজেপির এক প্রার্থীর স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনাটির রেশ টেনে সেলিমের তোপ, “এটা পরিষ্কার বিজেপিকে আটকাবে না তৃণমূল। ওই দুই দল একে অপরের পরিপূরক।” নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সেলিম টেনে আনেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ। সেলিমের ‘যুক্তি’: আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এর পরে উপনির্বাচনে বিজেপির পুরনো মুখ শত্রুঘ্ন সিন্হা ওই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হন। এটাই দু’দলের আঁতাঁত প্রমাণ করে বলে সেলিমের দাবি।
যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ব। আঁতাঁতের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিলীপ দে’র দাবি, “একমাত্র বিজেপি তৃণমূলকেই জব্দ করতে পারে। তা নানা ঘটনায় প্রমাণিত। বিজেপিকে আটকাতে সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে তৃণমূলের নেতারা পাশে দাঁড়িয়েছেন, এমন অনেক নজির আছে।” একই বিষয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “রাজ্যে বেশ কিছু এলাকায় সিপিএম, কংগ্রেসের প্রার্থী নেই। সেখানে বিজেপির প্রার্থী আছে। আবার এমন উল্টো চিত্রও আছে। ফলে, এটা পরিষ্কার যে বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের মহাজোট হয়েছে।” পাশাপাশি, ভোট লুটের আশঙ্কা প্রসঙ্গে শিবদাসনের বক্তব্য, “আসলে সিপিএমের সংগঠন নেই। তাই এ সব ভিত্তিহীন কথা বলে প্রচারে থাকতে চাইছেন ওঁরা।”
সিপিএমের মিছিল
রানিগঞ্জ: পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার আমরাসোতা পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিএম মিছিল করে। কোলিয়ারি মজদুর সভার বাঁশড়া কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয়। ছিলেন ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। মীনাক্ষী বলেন, “যাঁরা আমরাসোতা পঞ্চায়েতে সিপিএম প্রার্থী হিসাবে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা মানুষের জন্য কোনও কাজ করেননি। তাই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে মানুষ সিপিএমকেই নির্বাচিত করবেন।” তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, কারা কাজ করেছে, কারা আর করেননি, তা সাধারণ মানুষ জানেন। ভোটে হার নিশ্চিত জেনেই এমন মন্তব্য করছেন সিপিএমের নেতা-নেত্রীরা।