CPIM

বইয়ের স্টলে ভিড় উৎসাহ বাড়াচ্ছে, দাবি সিপিএমের

সিপিএম গত ৬৫ বছর ধরে নিয়ম করে বইয়ের পসরা নিয়ে স্টল দেয়। ২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে স্টল খুললেও মানুষষের উৎসাহ চোখে পড়ত না।

Advertisement
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:০৩
Share:

প্রতিবারই পুজোয় বইয়ের স্টল করার জন্য সিপিএমের বিভিন্ন স্তরের কমিটিকে বইয়ের জোগান দেয় সিপিএম পার্টির প্রকাশনা সংস্থা। ফাইল চিত্র।

তৃণমূল বিরোধী রাজনীতির পরিসরে কারা এগিয়ে, তা নিয়ে সিপিএম-বিজেপির লড়াই তুঙ্গে। কিন্তু পুজোর বাজারে বইয়ের স্টল থেকে বিক্রি, সবেতেই কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে সিপিএম। ফাইভ জি-র যুগেও গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন টাকার বই বিক্রি হয়েছে, দাবি সংগঠনের। একদা লালদুর্গ বর্ধমানের এই ছবি রাজনৈতিক ভাবে অক্সিজেন জোগাচ্ছে বলেও দাবি সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের। তাঁরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর পরে লক্ষ্মীপুজোয় যেমন বইয়ের স্টল খোলা হয়েছিল। তেমনই কাটোয়ার কার্তিক লড়াই, পূর্বস্থলীর রাস, কালনার সরস্বতী পুজোর মতো স্থানীয় উৎসবেও স্টল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘‘অনেকদিন যে দৃশ্য দেখা যায়নি, বইয়ের স্টলগুলিতে সেই উৎসাহ ধরা পড়েছে। গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেশি বিক্রি হয়েছে। আমরা ঠিক করেছি, শহর বা গ্রামে স্থানীয় উৎসবের সময়েও বইয়ের স্টল দেওয়া হবে।’’

পুজো মণ্ডপ চত্বর ও আশেপাশে বইয়ের স্টল খোলার রেওয়াজ দীর্ঘ দিনের। সিপিএম গত ৬৫ বছর ধরে নিয়ম করে বইয়ের পসরা নিয়ে স্টল দেয়। ২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে স্টল খুললেও মানুষষের উৎসাহ চোখে পড়ত না। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, বই বিক্রির চেয়েও জনসংযোগটাই মূল উদ্দেশ্য। এ বার অনেক মানুষ ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে স্টলে ঢুঁ মেরেছেন, খোঁজ-খবর নিয়েছেন, দাবি নেতাদের। বর্ধমানের একটি স্টলের দায়িত্বে থাকা অঞ্জন বিশ্বাসের দাবি, ‘‘শিক্ষিত যুবকদের একাংশ আমাদের স্টলে এসে খোঁজখবর নিয়েছেন। সবাই বই কিনেছেন, সেটা বলব না। তবে বই হাতে নিয়ে দেখে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন।’’ জেলা সিপিএমের দাবি, রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনে ভোট শতাংশও কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। তার পরেও গত বছর ২৪টি জায়গায় বইয়ের স্টল খোলা হয়েছিল। বিক্রি হয়েছিল লক্ষাধিক টাকার বই। এ বার সেখানে, মূলত শহর এলাকায় ৩০টি স্টল দেয় সিপিএম। বিক্রি হয়েছে দু’লক্ষ টাকারও বেশি বই। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরীর দাবি, ‘‘বিভিন্ন আন্দোলনে যুবকদের উৎসাহ বোঝা যাচ্ছিল। বইয়ের স্টলে তার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।’’

Advertisement

২০১৮ সাল থেকে পুজোর সময় বই-বিপণী শুরু করেছে বিজেপিও। ২০২০ সালে জেলায় ৬৩টি বইয়ের স্টল দেয় বিজেপি। গত বছর করোনার কারণে বইয়ের স্টল দেওয়া হয়নি। এ বছর বর্ধমান সাংগঠনিক জেলায় পাঁচটি বইয়ের স্টল খোলা হয়। ওই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তায়ের দাবি, ‘‘অনেক জায়গাতেই তৃণমূল স্টল খুলতে পরোক্ষ ভাবে বাধা দিয়েছে। পুজো কমিটিগুলিও তাদের মণ্ডপের সামনে স্টল না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। তার পরেও ৬০ হাজার টাকার উপরে বই বিক্রি হয়েছে।’’

বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা অবশ্য কতগুলি স্টল দেওয়া হয়েছিল বা কত বিক্রি হয়েছে, সেই তথ্য দিতে পারেনি।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বেশ কয়েক জায়গায় বইয়ের স্টল হয়েছিল। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই সাধারণ মানুষ সারা বছরই কেনেন। বিরোধীরা আষাঢ়ে গল্প শোনাচ্ছেন। মানুষ যে ওঁদের সঙ্গে নেই, তা প্রমাণিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement