প্রতীকী ছবি।
‘কোভিড-পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ বা ‘সিপিএমএস’ চালু হল পূর্ব বর্ধমানে। রাজ্য সরকারের দাবি, এ বার থেকে রোগীদের শারীরিক অবস্থার বিশদ তথ্য প্রতিদিন জানা যাবে। পরিজনের অনুরোধের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে মিলবে সেই তথ্য। এর আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সিএমওএইচ দফতরে চালু হয়েছে ‘হেল্প লাইন’। করোনা-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, তার রিপোর্ট, বই তৈরি থেকে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের ‘পোর্টালে’ পাঠানোর কাজ নিরবচ্ছিন্ন ভাবে করে চলেছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরা। স্বাস্থ্য দফতরের এক হেড-ক্লার্কের মৃত্যু, ন’জন করোনা-আক্রান্তের পরেও কাজে ছেদ পড়েনি।
সোমবার সকালে স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য ভবনে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ন’জনে। তাঁদের সংস্পর্শে আসায় বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী নিভৃতবাসে রয়েছেন। প্রশাসনের কর্তাদের আশঙ্কা ছিল, অনেক কর্মী নিভৃতবাসে থাকায় দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। কিন্তু ওই সব কর্মীদের কাজ নিজেদের কাঁধে নিয়েছেন বেশ কয়েকজন কর্মী ও ঠিকাকর্মী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্যভবনে থেকে তাঁরা সিপিএমএসের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, আবার স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানোর জন্য প্রতিদিন বুলেটিন তৈরি করছেন। করোনা-সংক্রান্ত বই তৈরির দায়িত্বও তাঁরা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, আরটি-পিসিআর যন্ত্রে ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট এসেছে যাঁদের, তাঁরাই দফতরে বসে কাজ করছেন।
ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদারের দাবি, ‘‘গত ছ’মাস ধরে দফতরের কেউ ছুটি নেননি। এক দিনের জন্যও কাজ বন্ধ হয়নি। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবাই কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। আক্রান্ত ও নিভৃতবাসে থাকা কর্মীদের কাজও সবাই মিলে দায়িত্ব নিয়ে করে দিচ্ছেন।’’
তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারের কর্মচারী সমিতির নেতা বিশ্বজিৎ সাঁইয়ের দাবি, ‘‘পাশের টেবিলে কোনও সহকর্মী করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন শুনলেই অনেকে ভয় পেয়ে যান। অনেকে মনোবল হারান। অতিমারির সঙ্গে লড়তে গিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলেননি।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ১৮০ শয্যার কোভিড-হাসপাতাল হল ‘ক্যামরি’। সেখানকার রোগীদের অবস্থা জানতে চালু হয়েছে ‘সিপিএমএস’। প্রতিদিন সকালে প্রতিটি রোগীর শারীরিক অবস্থা, বয়স্ক রোগী কিংবা এক বছরের কম বয়সী শিশু ভর্তি আছে কি না জেনে রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। ‘লাল’, ‘হলুদ’ ও ‘কমলা’ রঙ দিয়ে রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে রিপোর্ট করতে হয়। বর্তমানে জেলার ওই হাসপাতালে ২১ জন রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক (লাল রং) বলে জানানো হয়েছে। রোগীর শরীরে অক্সিজেন মাত্রা, ভেন্টিলেটর লাগছে কি না, রক্তচাপ, চিকিৎসায় কতটা সাড়া দিচ্ছেন—সব ওই রিপোর্টে জানা যাবে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও ওই রিপোর্ট দেখেই আক্রান্তের উপরে নজর রাখছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)