দক্ষিণবঙ্গে ওযুধ ব্যবসার দ্বিতীয় বৃহত্তম কেন্দ্র বর্ধমান। নিজস্ব চিত্র।
টিকাকরণ ঘিরে অচলাবস্থা চলছে পূর্ব বর্ধমানে। গত কয়েক দিন ধরে টিকা দেওয়ার কাজ কার্যত বন্ধ রয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ-সহ জেলার বেশ কিছু টিকা-কেন্দ্রে। কেবলমাত্র সরকারি উদ্যোগে হকার, ড্রাইভার এবং সাংবাদিকদের টিকা দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পরিষেবায় জীবনের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে আন্দোলনে নামলেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, টিকা না দেওয়া হলে তাঁরা ওষুধ বিক্রি বন্ধ করে দেবেন। টিকা না পেলে আগামী দিনে ওষুধ দোকান বন্ধ রাখার হুমকিও দিয়েছে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’। বুধবার বর্ধমান কল্যাণী মার্কেটে চত্বরে আন্দোলনে সামিল হন সেখানকার ওষুধ ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।
আন্দোলনকারী ওষুধ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা টিকা না পাওয়ায় আতঙ্কিত তাঁরা। ‘বেঙ্গল কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক (সংগঠন) গঙ্গাধর খান্ডেলওয়াল বলেন, ‘‘গত ১৮ মে রাজ্য সরকার একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। তাতে পেট্রোল পাম্পের কর্মী, হকার, পরিবহণ কর্মীদের নাম থাকলেও ওষুধ ব্যবসায়ী এবং ওষুধ দোকানের কর্মীদের নাম নেই। অথচ নিজেদের জীবন বাজি রেখে তাঁরা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করেন। ইতিমধ্যেই কল্যাণী মার্কেটে বেশ কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ীরা ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি মারাও গিয়েছেন। টিকার জন্য জেলাশাসক, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ জেলা ও রাজ্য আধিকারিকদের জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না। অতি শীঘ্র ওষুধ ব্যবসায়ীদের করোনা টিকা না দিলে আগামী দিনে এই ওষুধের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে বলেন তিনি।’’ সংস্থার সম্পাদক মৃণাল তা বলেন, ‘‘আমরাও প্রথম সারির করোনা যোদ্ধার মধ্যে পড়ি। ডাক্তারদের পরেই আমরা। করোনা টিকা না দেওয়ায় আমরা আতঙ্কিত।’’
প্রসঙ্গত, শুধু বর্ধমান শহরেই ওষুধের পাইকারি ও খুচরো ওষুধের ব্যবসার যে পরিধি, তা দক্ষিণবঙ্গে কলকাতা ছাড়া আর কোথাও নেই। এই বাজারের উপর দক্ষিণবঙ্গ ও লাগোয়া ঝাড়খন্ডের বেশ কিছু জেলা নির্ভরশীল। তাই ওষুধ বিক্রির পরিষেবা ব্যাহত হলে খুব সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা আমজনতার।