প্রতীকী ছবি।
ক্রমাগত রূপ বদলের ফলে সংক্রমণ ক্ষমতাও বেড়েছে করোনাভাইরাসের কয়েকটি নয়া প্রজাতির। ভবিষ্যতে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে আরও সংক্রামক রূপের সন্ধান মেলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকদের একাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২০-র অক্টোবরে প্রথম ভারতে করোনাভাইরাসের বি.১.৬১৭ প্রজাতিটির (যা 'করোনার ভারতীয় রূপ' বলে পরিচিতি পেয়েছে) সন্ধান মেলে। পরে তা দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ২ দফার জিনগত চরিত্র বদলের কারণে বি.১.৬১৭ ভাইরাসটিকে ‘দ্বি-পরিব্যক্ত’ (ডাবল মিউট্যান্ট) হিসেবে চিহ্নিত করেছে ‘হু’। যার সংক্রমণ ক্ষমতা অন্য প্রজাতিগুলির তুলনায় বেশি। তবে ভারতে সবচেয়ে বেশি ছড়ালেও করোনাভাইরাসের বি.১.৬১৭ প্রজাতিটিকে ‘ভারতীয়’ হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। ভাইরাসটির জিনগত বৈচিত্র পর্যালোচনা করে এমনই রায় দিয়েছেন গবেষকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে ‘উৎপত্তিস্থল’ হিসেবে ব্রিটেনকে চিহ্নিত করা যেতে পারে।
নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবদনে বলা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে ৩ দফায় জিনের গঠন বদলানো (ট্রিপল মিউট্যান্ট) করোনাভাইরাস বি.১.৬১৮-র সন্ধান মিলেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ কয়েকটি রাজ্যে । যদিও দিল্লির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল-এর ডিরেক্টর সুরজিৎ সিংহের মতে বি.১.৬১৭-এর ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার তুলনায় বেশি। অর্থাৎ, রূপ বদলালেই করোনাভাইরাস বেশি সংক্রমক হবে, এমনটা নাও হতে পারে।
গত বছরের গোড়ায় নভেল করোনাভাইরাসের যে রূপ ভারতে সংক্রমিত হতে শুরু করেছিল, তা এখন অনেক বদলে গিয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকেরা। জিনের গঠন বিন্যাসের বদলের ফলে তৈরি হয়েছে ডি-৬১৪জি-এর মতো প্রায় ১০ গুণ বেশি সংক্রামক রূপ। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় এই প্রজাতির করোনাভাইরাসের সন্ধান মিলেছে।
২০২০-র গোড়ায় করোনাভাইরাসের প্রথম পরিব্যক্ত প্রজাতি বি.১-এর খোঁজ মিলেছিল। তার পর দফায় দফায় এর চরিত্র বদলেছে। সোনিপতের অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিজ্ঞানী শাহিদ জামিলের মতে, অদূর ভবিষ্যতে জিনের পরিব্যক্তির মাধ্যমে আরও সংক্রামক হয়ে উঠতে পারে করোনাভাইরাসের ‘ভারতীয়’ রূপগুলি। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রবীন্দ্র গুপ্তও এই মতে সায় দিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনাভাইরাসের পরিব্যক্ত রূপ বি.১.৩৫১-এর ক্ষেত্রেও আরএনএ স্পাইক প্রোটিনের বিন্যাস বদলের ফলে বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে পারে বলে নানা গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বি.১.৬১৭.২ প্রজাতি সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে প্রভাব ফেলছে। শিশুরাও তাতে আক্রান্ত হচ্ছে।