গুড়িয়া মাহাতোর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।
আসানসোলের টিকা-কাণ্ডের পর তৃতীয় দিনেও গুড়িয়া মাহাতোকে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগের থেকে ভাল থাকলেও গুড়িয়াকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। গুড়িয়া নিজে জানিয়েছেন, হাতে সামান্য ব্যথা থাকলেও তা আগের থেকে কম।
সোমবার গুড়িয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসক অপূর্বকুমার পান। তিনি বলেন, ‘‘গুড়িয়া আগের থেকে ভাল রয়েছেন। হাতের ব্যথাও আনেকটাই কম, জ্বরও নেই। টিকা নেওয়ার পর অনেকেরই ১-২ দিন গায়ে হাল্কা ব্যথা হয়, জ্বর-জ্বর ভাব থাকে। তবে গুড়িয়াকে পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ এসেছে, তা-ই করা হচ্ছে।’’ যাঁর সঙ্গে এই বিতর্কের নাম জড়িয়ে গিয়েছে, সেই গুড়িয়া বলেন, ‘‘পেটে হাল্কা ব্যথা রয়েছে। মাথাটাও যন্ত্রণা করছে। হাতের যেখানে টিকা নিয়েছিলাম, সেখানে কন কন করছে। তবে ডাক্তারবাবু প্রতিদিন দেখতে আসছেন।’’
প্রসঙ্গত, শনিবার আসানসোলের চবকায় যৌনকর্মীদের জন্য টিকাকরণ শিবিরে চিকিৎসক-নার্স থাকা সত্ত্বেও নিজের হাতে টিকা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেত্রী তবস্সুম আরা। ঘটনাচক্রে, তবস্সুমের হাত থেকে টিকা নিয়েছিলেন গুড়িয়া। বিতর্ক শুরু হতেই তবস্সুমকে শো-কজ করা হয়। শিবিরে উপস্থিত চিকিৎসক অপূর্বকুমার পান-সহ মনালি ভট্টাচার্য এবং শাহনওয়াজ পারভিন নামে দু’জন নার্সের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
আসানসোল পুরনিগমের কুলটি বোরো অফিসের সামনে বামেদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
আসানসোলের টিকা-কাণ্ড নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তাকে হাতিয়ার করে শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। কুলটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই কাণ্ড নিয়ে তদন্তের দাবি জানান বিজেপি-র সংখ্যালঘু সেলের সহ-সভাপতি জিসান কুরেশি। সোমবার কুলটির বাম ছাত্র এবং যুব সংগঠনের নেতৃত্বে লছিপুর চবকার টিকা-কাণ্ডের প্রতিবাদ করা হয়। আসানসোল পুরনিগমের কুলটি বোরো অফিসে সামনে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ছিলেন নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘ভোটের আগে ওরা বলেছিল, ‘খেলা হবে’। আমরা ভেবেছিলাম, রাজনীতিতে হার-জিতের খেলার কথা বলা হচ্ছে। তবে এখন তো দেখছি, ভুয়ো ডাক্তার-মেডিক্যাল স্টাফ সেজে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা নিজেরা ভ্যাকসিনও দিয়ে দিচ্ছেন। মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা চলছে। এই খেলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর ডেপুটেশন দিয়েছি।’’