প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলায় করোনার প্রকোপ কমছে। কিন্তু তার পরেও পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া, তাঁদের একাংশের মতে, কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরে, অন্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য-সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি বলে মনেকরছেন চিকিৎসকেরা।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত প্রায় এক মাসের নিরিখে দৈনিক গড় হিসেবে সংক্রমণের হার (অর্থাৎ, জেলায় একশো জনের পরীক্ষায় কত জন সংক্রমিত) ৩.২ শতাংশে নেমে এসেছে। এক মাসে সুস্থতার হার ৮৮ থেকে ৯৩.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। মৃত্যুর হার গত এক মাসে পূর্ববর্তী মাসগুলির তুলনায় ১.৩ থেকে ০.০৬ শতাংশে নেমেছে। চলতি বছরের অগস্টের শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, জেলায় দৈনিক সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নীচে নামছে না কেন। ঘটনাচক্রে, সে সময়ে এই হার ছিল ৮.৩ শতাংশ। তবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অক্টোবর থেকে সেই হার কমতে শুরু করে।
রাজ্য সরকারের পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান জেলা কোভিড ম্যানেজমেন্ট কমিটির কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, আগে বেশির ভাগ রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হতেন হাসপাতালে। এখন সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি হচ্ছেন। এর কারণ, ‘করোনা-ভীতি’ কমছে। তবে সমরেন্দ্রবাবুর দাবি, ‘‘সংক্রমিতেরা সুস্থ হওয়ার পরে তাঁদের একাংশের মধ্যে কিডনি, হৃদরোগের নানা সমস্যা বাড়ছে। তাই, সংক্রমিতদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে যে, সুস্থ হওয়ার পরেও অন্য রোগ হয়ে থাকলে তারও নিয়মিত চিকিৎসা জরুরি। জরুরি করোনা-সচেতনতাও। প্রশাসন এই বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালাক।’’
‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে’র আসানসোল শাখার সভাপতি শ্যামল সান্যাল আরও জানান, শীতে ভাইরাস বেশি সক্রিয় থাকে। তাই শীতে সংকমণ বৃদ্ধির প্রবণতা থেকে। তবে তাঁর মতে, ‘‘এ পর্যন্ত, যা পরিসংখ্যান, তাতে দেখা যাচ্ছে শীতের শুরুতে সংক্রমণ বাড়েনি। এই পরিস্থিতিতে সচেতনতা মানার ক্ষেত্রে আমাদের সবার কোনও রকম ঢিলে দিলে চলবে না।’’
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্মীদের লাগাতার চেষ্টায় মানুষ অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সচেতনতা প্রচারে আরও জোর দেবে প্রশাসন।’’