জিতেনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (অনিচ্ছাকৃত খুন), ৩০৮ (অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা), ৩৪ ধারায় (যৌথভাবে কোনও ঘটনা সংগঠিত করা) মামলা হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
কম্বলকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোলের বিশেষ আদালত। রবিবার জিতেনকে আদালত থেকে বের করার পথে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। পুলিশের গাড়িতে উঠতে উঠতে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‘আমার যা লাইফস্টাইল আমি মাটিতেও শুতে পারি। আমার পুলিশ হেফাজত হোক বা জেল হেফাজত, কিচ্ছু যায় আসে না। যারা মোটা মোটা গদিতে ঘুমোয়, তারা ভাবুক, তাদের কী হবে।’’
গত বছর ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা জিতেন্দ্রর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারির উদ্যোগে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি ওই অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কম্বল নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় একাধিক ব্যক্তির। এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েন সস্ত্রীক জিতেন্দ্র। পাশাপাশি পুলিশ জানিয়ে দেয় ওই অনুষ্ঠান করার জন্য তাদের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। একাধিক বার জিতেন্দ্র এবং তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এর পর শনিবার আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর এবং আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে নয়ডায় যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে। সেখান থেকে দমদম বিমানবন্দর হয়ে জিতেনকে নিয়ে যাওয়া হয় দমদমের সরকারি হাসপাতালে। সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর তাঁকে নিয়ে আসানসোল নিয়ে যায় পুলিশ।
আদালতে নিজের জন্য সওয়াল করতে গিয়ে জিতেন বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে আগামিকাল (সোমবার) এই মামলার শুনানি রয়েছে। সে জন্য পুলিশ হেফাজত দিন। কিন্তু দু’দিনের জন্য দিন। তার পরে সুপ্রিম কোর্টের রায় যা হবে তা দেখে প্রয়োজন হলে আরও ১২ দিন পুলিশ হেফাজত দিয়ে দেবেন। কিন্তু আজ ২ দিনের পুলিশ হেফাজত দিন।’’ বিচারক অবশ্য দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর জিতেনকে ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (অনিচ্ছাকৃত খুন), ৩০৮ (অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা), ৩৪ ধারায় (যৌথ ভাবে কোনও ঘটনা সংগঠিত করা) মামলা রুজু করে পুলিশ।