Corpse

মা-ছেলের দেহ উদ্ধার হিরাপুরে

পুলিশেরও অনুমান, ওই মহিলা মানসিক অবসাদের জেরে ছেলেকে মেরে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিরাপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share:

মঙ্গলবার রাধানগর রোডের ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র ।

ঘরের দরজা ভেঙে মা ও তেরো মাসের ছেলের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানার রাধানগর রোড এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম বৈশাখি মাজি (৩১) ও অন্তরীপ মাজি। পরিবার সূত্রের দাবি, মানসিক অবসাদ থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গিয়েছে। তা দেখে পুলিশেরও অনুমান, ওই মহিলা মানসিক অবসাদের জেরে ছেলেকে মেরে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন।

Advertisement

রাধানগর রোডের দোতলা বাড়িতে বৌমা ও নাতিকে নিয়ে থাকেন সস্ত্রীক ধর্মদাস মাজি। ধর্মদাসবাবু জানান, একতলায় তিনি ও তাঁর স্ত্রী থাকেন। উপরের তলায় পুত্রবধূ ও নাতি থাকত। তাঁর একমাত্র ছেলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাটোয়া শাখায় কর্মরত। তিনি এখন নিজের কর্মস্থলেই রয়েছেন। পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে দেহ উদ্ধারের পরে, জিজ্ঞাসাবাদে ধর্মদাসবাবু তাদের জানিয়েছেন, বেলা গড়িয়ে যাওয়ার পরেও বৌমা ঘরের দরজা না খোলায় চিন্তায় পড়ে যান তিনি। কারণ, প্রতিদিন সকালে বৌমাই ঘর থেকে নেমে শ্বশুর-শাশুড়ির খোঁজ নেন। ধর্মদাসবাবুর দাবি, ‘‘দেরি হচ্ছে দেখে, উপরে গিয়ে বৌমাকে ডাকাডাকি করি। কিন্তু কোনও সাড়া না পেয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করি। এর পরে বৌমার বাপের বাড়িতে খবর পাঠাই।’’ বার্নপুরের বনগ্রামের বাসিন্দা মৃতার ভাই কল্যাণ মাজি জানান, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত রাধানগরে দিদির শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখেন সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন তাঁর দিদি। খাটের এক প্রান্তে মৃতদেহ পড়ে ছিল ভাগ্নের। ভাগ্নের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরিয়েছে। তা দেখে পরিবারের লোকেরা হিরাপুর থানায় খবর দেন।

মৃতার শ্বশুর ও ভাই, দু’জনেই পুলিশকে জানিয়েছেন, অন্তরীপের শ্রবণশক্তি নেই বলে ডাক্তারি পরীক্ষায় তাঁরা জেনেছিলেন। তা নিয়ে বৈশাখিদেবী হতাশায় ভুগছিলেন। তবুও চিকিৎসা করিয়ে শ্রবণশক্তি ফেরানোর চেষ্টা চলছিল। সোমবার একটি রিপোর্ট পান বৈশাখিদেবী। তা দেখে তিনি নিশ্চিত হন, কোনও ভাবেই শিশুটির পক্ষে কানে শুনতে পাওয়া সম্ভব নয়। তার পরে এই কাণ্ড। ঘটনার খবর পেয়ে এ দিন বাড়িতে পৌঁছন মৃতার স্বামী অনুপম মাঝি। তিনিও বলেন, ‘‘ছেলের এই অবস্থা নিয়ে স্ত্রী ভেঙে পড়েছিল। তাকে অনেক বোঝানো হয়েছে। কিছুই কাজে এল না!’’ পুলিশ জানায়, দেহ দু’টি আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement