Coronavirus

‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে অবসর নিতে সমস্যায়

স্কুলে ‘কন্যাশ্রী’, ‘শিক্ষাশ্রী’, ‘মিড ডে মিল’-সহ নানা প্রকল্প পরিচালনা, স্কুলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে নজর রাখার মতো নানা কাজে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে (টিচার ইনচার্জ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হয়।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৬:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি

‘লকডাউন’-পরিস্থিতি চলছে। এ দিকে, পশ্চিম বর্ধমানের বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা অবসর নিতে চলেছেন বা এই পর্বের মধ্যেই অবসর নিয়েছেন। তাঁদের অনেকেই জানান, এই পরিস্থিতিতে নতুন কাউকে কী ভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন, কী ভাবে ‘পেনশন’ সংক্রান্ত কাগজ তৈরি করবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

Advertisement

স্কুলে ‘কন্যাশ্রী’, ‘শিক্ষাশ্রী’, ‘মিড ডে মিল’-সহ নানা প্রকল্প পরিচালনা, স্কুলের আয়-ব্যয় সংক্রান্ত বিষয়ে নজর রাখার মতো নানা কাজে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে (টিচার ইনচার্জ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হয়। অবসরের মুহূর্তে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা যাবতীয় দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে স্কুল ছাড়েন।

কিন্তু শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, ‘লকডাউন’-এর ফলে সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন, দুর্গাপুর মহকুমার একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক মাসখানেক আগে অবসর নিয়েছেন। মৌখিক ভাবে ব্যবস্থা করা হলেও, নথিগত ভাবে নতুন কাউকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি সেই প্রধান শিক্ষকের পক্ষে। জুনে অন্য একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অবসর নেওয়ার কথা। তিনিও জানান, স্কুলের নানা প্রকল্পের খুঁটিনাটি অন্য কাউকে বুঝিয়ে দেওয়া কত দূর সম্ভব হবে, তা নিয়ে তাঁর সংশয় রয়েছে।

Advertisement

বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র দুর্গাপুর জোনাল সম্পাদক সিদ্ধার্থ বসু বলেন, ‘‘লকডাউন পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা রেখে কাজ করাটা বেশ কঠিন। যে সব প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকা এই সময়পর্বে অবসর নিচ্ছেন, তাঁদের পক্ষেও যাবতীয় দায়দায়িত্ব এই সময়ে সম্পাদন করাটা বেশ কঠিন। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’’

তৃণমূল প্রভাবিত ‘তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি’র জেলা সভাপতি স্কুল রাজীব মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য স্কুলের অফিস খোলা থাকছে আগামী ৫ মে পর্যন্ত। কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকারই আদতে ছুটি নেই। ফলে, কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পাল জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি অনুযায়ী চলতে হবে। স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা পরবর্তী ‘সিনিয়র’ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন। প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতিকে চিঠি দিয়ে দায়িত্বভার হস্তান্তর ও হিসেব সংক্রান্ত বিষয় লিখিত ভাবে জানিয়ে যাবেন। পরে স্কুল খুললে দরকার হলে, এক দিন তাঁকে স্কুল পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে তা খতিয়ে দেখা হবে।

সরকারি নির্দেশে ১০ জুন পর্যন্ত স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ থাকার কথা। সে ক্ষেত্রে তার আগে যাঁরা অবসর নেবেন তাঁদের নিয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠক কি ১০ জুনের পরে ডাকা হবে? অজয়বাবু জানান, মাঝেই এক দিন বৈঠক ডেকে বিষয়টি সেরে ফেলতে পারে পরিচালন সমিতি। তিনি বলেন, ‘‘অবসর নেওয়ার আগে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা পরিচালন সমিতির সভাপতির সঙ্গে কথাবার্তা বলে নির্দিষ্ট দিন ঠিক করে দিয়ে যাবেন। সেই দিন বৈঠক করে নেওয়া হবে।’’

শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, পেনশনের কাগজপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া অনলাইনের মাধ্যমে সেরে নেওয়া যাবে। ইতিমধ্যেই অবসর নেওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে ‘রোপা ১৯’ অনুযায়ী পেনশন পান, তাঁদের ফাইলে কোনও ত্রুটি থাকলে তা অনলাইনের মাধ্যমে ঠিক করে নেওয়ার জন্য স্কুলগুলিকে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement