প্রতীকী ছবি
করোনা-সংক্রমণের পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ মসজিদে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জুম্মাবারের (শুক্রবার) নমাজ। জমায়েত রুখতে ‘পাঁচ ওয়াক্ত’ (দিনে পাঁচ বার) নমাজও বন্ধ রেখেছে অনেক মসজিদ। ‘শবে বরাতে’ও একই পথে হাঁটতে চলেছে তারা।
নানা সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের কাছে ঘরে থেকে প্রার্থনা করার আর্জি জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাংবাদিক বৈঠক করে একই আবেদন করেছেন। বুধবার জেলার ইমামদের সংগঠন জামিয়াতুল আইম্মা অল উলামার (ইমাম ও উলেমা পরিষদ) জেলা সম্পাদক শেখ সামশের আলমও বলেন, “লকডাউন চলছে। জমায়েত রুখতে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলিমকে আমরা বাড়িতেই নমাজ পড়তে আহ্বান জানিয়েছি। শবে বরাতের রাতেও আমরা বাড়িতে নমাজ পড়ব। প্রার্থনার নামে কবরস্থানেও ভিড় না করাই ভাল।”
‘শবে’ ফার্সি শব্দ। এর অর্থ হল রাত। আর ‘বরাত’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ নিষ্কৃতী পাওয়া। শবে বরাতে খারাপ কিছু থেকে নিষ্কৃতী চেয়ে রাতভর মসজিদে বা বাড়িতে নমাজ পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। মৃত নিকট আত্মীয়ের আত্মার শান্তি কামনায় কবরস্থানে গিয়ে তাঁর কবরের কাছে দাঁড়িয়েও প্রার্থনা করা হয়। আজ, বৃহস্পতিবার সেই প্রার্থনার রাত। কিন্তু করোনাভাইরাসের দাপটে দেশের মানুষ যখন গৃহবন্দি। তখন এই প্রার্থনার অনুষ্ঠানেও রাশ টানতে চাইছে ধর্মীয় সংগঠনগুলি।
প্রশাসনের তরফে বারবার সমস্ত দেশবাসীকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেও লাগাতার প্রচার চলছে। প্রশাসনের ডাকে সাড়া দিয়ে, গত দুটি শুক্রবারে জেলার বেশির ভাগ মসজিদেও ভিড় তেমন হয়নি। গলসির জাগুলিপাড়া গ্রামের মসজিদের ইমাম ইবাদুর রহমান মাজাহিরি বলেন, “আমাদের মসজিদে জুম্মার নমাজ লকডাউনের পর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত নমাজও বন্ধ রয়েছে। শবে বরাতের নমাজও গ্রামবাসীকে বাড়িতে একা একা পড়তে আহ্বান করা হয়েছে।” কাটোয়ার করজগ্রাম মাদ্রাসার-সহ সম্পাদক রহম্মতউল্লাহ চৌধুরীও বলেন, “বাড়িতেই একা একা নামাজ পড়তে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। করবস্থানেও বেশি ভিড় না করাই কাম্য।’’ মেমারির জামিয়া ইসলামিয়া মদিনাতুল উলুমের প্রিন্সিপ্যাল তথা জমিয়েত উলামে হিন্দের রাজ্য সম্পাদক (অরাজনৈতিক) ক্বারী শামসুদ্দিন আহমেদও বলেন, “এই পরিস্থিতিতে বাড়িতেই নমাজ পড়াই ভাল। আর শবে বরাতের রাতে কবরস্থানে যেতেই হবে এমন কোনও নির্দেশ ইসলামে নেই। তাই কোথাও ভিড় বা জমায়েত না করাই ভাল।’’