Coronavirus Lockdown

সংসারের টাকা বাঁচিয়ে দুঃস্থদের পাশে

আনন্দপল্লির তোষালি মিত্র, ভাতছালার পায়েল চক্রবর্তী, বড়নীলপুরের সুস্মিতা সিংহরা জানান, একটি যোগব্যায়াম কেন্দ্রে এক সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২০ ০৫:৫৪
Share:

খাদ্যদ্রব্য বিলি করছেন ওই মহিলারা। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির লোকেদের জন্য রান্না করতে গিয়ে কাজহারা, খেতে না পাওয়া মানুষদের কথা মনে হত তাঁদের। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদেই একজোট হন বর্ধমানের ওই মহিলারা। সংসারের টাকা বাঁচিয়ে, বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দুঃস্থদের খাবার বিলি করছেন তাঁরা। পাশে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষিকা থেকে কলেজ ছাত্রীরাও।

Advertisement

আনন্দপল্লির তোষালি মিত্র, ভাতছালার পায়েল চক্রবর্তী, বড়নীলপুরের সুস্মিতা সিংহরা জানান, একটি যোগব্যায়াম কেন্দ্রে এক সঙ্গে প্রশিক্ষণ নেন তাঁরা। একে অপরের সঙ্গে গল্পের মাঝেই অন্যকে সাহায্য করার ইচ্ছের কথা জানান তাঁরা। ‘হিয়ার মাঝে’ নামে হোয়াটস্ অ্যাপ গ্রুপ খুলে শুরু হয় বিস্তারিত আলোচনা। বর্তমানে দু’কেজি চাল, আড়াইশো গ্রাম ডাল, দু’শো গ্রাম তেল, বিস্কুট-সাবান, সয়াবিন ও মুড়ির প্যাকেট নিয়ে নানা জায়গায় ছুটছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, “চারদিকে একটা অস্থির পরিবেশ। আমরা জানি, দু’তিন দিনের বেশি খাবার আপাতত দিতে পারছি না। কিন্তু যতটুকু পারি, করার তাগিদ নিয়েই এগিয়েছি। আমাদের পরিবারও উৎসাহ দিয়েছে।’’

কিন্তু সংসার সামলে দুঃস্থদের খুঁজে বার করা ও এলাকায় পৌঁছনের ব্যবস্থা নিয়ে প্রথমে চিন্তায় পড়েছিলেন তাঁরা। সেই চিন্তা দূর করেন প্রান্তিক বাজারের আনাজ বিক্রেতা রঙ্গলাল রায়। তিনি প্রস্তাব দেন, তাঁদের গ্রামে অনেক বৃদ্ধার ঘরে খাবার নেই। তাঁদের সাহায্য করলে ওই মানুষেরা দু’মুঠো ভাত পাবেন। কয়েকদিনের মধ্যেই তহবিল গড়ে খাবার কিনে খণ্ডঘোষের শশঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের গৈতানপুরের চরমানায় হাজির হন ওই মহিলারা। ৬০ জনের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। শুক্রবার কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বর্ধমান শহরের কাছে একটি গ্রামেও ৪২ জনের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন তাঁরা।

Advertisement

বি সি রোডের বাসিন্দা, একটি হাইস্কুলের শিক্ষিকা নাজিরা জিলানি মণ্ডলের কথায়, “ওই মহিলাদের কাজের কথা শুনে উৎসাহিত হয়েছি। ওঁদের সঙ্গে গিয়ে খাবারও বিলি করেছি। ভাল কাজে নামলে অনেক মানুষই পাশে থাকেন, বোঝা যাচ্ছে।’’

এ দিন সাদা কাগজে ‘মাস্ক’ পরা, হাত ধোয়ার মতো বিষয়ের গুরুত্বের কথা লিখে গায়ে সাঁটিয়ে নিয়েছিলেন তাঁরা। মাইকেও করোনা নিয়ে সচেতনতা প্রচার করা হয়। কর্মসূচি শেষে এক সঙ্গে গলা মেলান ‘উই শ্যাল ওভারকাম’-এর সুরে। ভাতছালার প্রথমা চট্টোপাধ্যায় বললেন, “এক বৃদ্ধা খাবারের প্যাকেট নিয়ে হাত ধরে কেঁদে ফেলেছিলেন। খাবারের জন্য আকুতিটা বাইরে না বেরোলে, বুঝতে পারতাম না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement