দুর্গাপুর স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্জাব ও রাজস্থান থেকে দু’টি বিশেষ ট্রেন মঙ্গলবার এল পশ্চিম বর্ধমানে। ট্রেন দু’টি আসানসোল ও দুর্গাপুর স্টেশনে থামে। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরে, প্রশাসন দক্ষিণবঙ্গের নানা প্রান্তের যাত্রীদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করে।
রেল সূত্রে জানা যায়, পঞ্জাবের সিরহিন্দ থেকে নিউ জলপাইগুড়িগামী (এনজেপি) ট্রেনটি এ দিন প্রথমে আসানসোলে ও পরে দুর্গাপুরে থামে। দুর্গাপুরে ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে পৌঁছয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে, ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত প্রমুখ।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান প্রভৃতি জেলার বাসিন্দারা নামেন ওই ট্রেন থেকে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘৫০টি বাস ও কিছু গাড়িতে করে যাত্রীদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। সবার ‘থার্মাল স্ক্যানিং’ করা হয়েছে। বাড়ি ফিরে তাঁরা ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকবেন।’’
ট্রেন থেকে নেমে বাঁকুড়ার বাহার মল্লিক বলেন, ‘‘দু’বছর আগে পঞ্জাব গিয়েছিলাম। লুধিয়ানার একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতাম। তিন সন্তান-সহ মোট সাত জনের পরিবার আমাদের। বাড়ি ফিরতে পারায় ভাল লাগছে। তবে এ বার কী করে সংসার চলবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার বাসিন্দা শম্ভু সাঁতরার অভিযোগ, ‘‘কাজ বন্ধ। বেতন মেলেনি। খাদ্যসামগ্রী দেয়নি পঞ্জাব সরকার।’’ একই অভিযোগ করেন পূর্ব বর্ধমানের শেখ আজহারউদ্দিনও। তবে নদিয়ার বাসিন্দা মাইক্রোবায়োলজির পড়ুয়া অয়ন্তিকা দে বলেন, ‘‘হস্টেলে থাকতাম। কোনও সমস্যা ছিল না। বাড়ি ফেরার সুযোগ পেয়ে ভাল লাগছে।’’
পাশাপাশি, রাজস্থানের পালি মারওয়ার থেকে হাওড়াগামী ট্রেনটি আসানসোলের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে। পরে, সন্ধ্যায় দুর্গাপুরেও থামে ট্রেনটি।
রেল ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে রাজস্থান থেকে আসা ট্রেনের উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের সিরহিন্দ থেকে আসা ট্রেনে চাপানো হয়। পাশাপাশি, সিরহিন্দ থেকে আসা হাওড়া, হুগলির বাসিন্দাদের পালি মারওয়ার থেকে আসা ট্রেনে চাপানো হয়।
আসানসোল রেল ডিভিশনের সিনিয়র সিকিওরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র বলেন, ‘‘রেলের তরফে যাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া হয়েছে।’’ রেলের পক্ষ থেকে আরপিএফ আধিকারিকেরা যাত্রীদের দেখভাল করেন। এ দিন দু’টি ট্রেনের প্রায় ১,৫৩৬ জন যাত্রীকে খাবারের প্যাকেট ও পানীয় জল দেওয়ার ব্যবস্থা করে রেল।