প্রতীকী ছবি।
করোনা মোকাবিলায় নাবালক-নাবালিকার মায়েদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। জুনের শেষ সপ্তাহে এ ব্যাপারে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে জেলাশাসক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের (সিএমওএইচ) কাছে। তবে কবে থেকে এই টিকাকরণ শুরু হবে, তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। পূর্ব বর্ধমানের সিএমওএইচ প্রণব রায় বলেন, ‘‘শীঘ্রই নির্দেশিকা অনুযায়ী, টিকা দেওয়া হবে।’’ আজ, মঙ্গলবার জেলায় টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে টিকা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
জেলায় স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিজন ও গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্তদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যকর্মীর পরিজনদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, টিকাকরণের আওতায় না থাকার জন্য করোনার তৃতীয় ঢেউ এলে নাবালক-নাবালিকাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। শিশুদের চিকিৎসায় জেলার নানা হাসপাতালে বিশেষ পরিকাঠামো তৈরি শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে সদ্যোজাত থেকে ১২ বছর বয়সী সন্তান রয়েছে, এমন মায়েদের দ্রুত টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নানা টিকাকরণ ও পোলিও কর্মসূচির সূত্রে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের তালিকা তাদের কাছে আছে। ফলে, তাদের মায়েদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করা সহজ। ছয় থেকে ১২ বছর বয়সীদের মায়েদের তালিকা তৈরির জন্য ব্লক স্তরে আশাকর্মী ও পুরসভার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করবেন। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলামের আশ্বাস, ‘‘সমীক্ষা হয়ে গেলেই নিকটবর্তী টিকাকরণ কেন্দ্রে মায়েদের টিকা দেওয়া হবে।’’ জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা জানান, টিকা নেওয়ার সময়ে আধার কার্ডের পাশাপাশি সন্তানের জন্মের শংসাপত্র সঙ্গে আনতে বলা হবে।
এই উদ্যোগ কেন? স্বাস্থ্য-কর্তাদের মতে, কোনও নাবালক-নাবালিকা সংক্রমিত হলে মায়েরাই পাশে থাকবেন। আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো পরিস্থিতি হলে, কোভিড হাসপাতালের বিশেষ মহিলা ওয়ার্ডে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে থাকবেন মা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকা না নেওয়া থাকলে করোনা ওয়ার্ডে থাকতে দেওয়া বিপজ্জনক। তা ছাড়া, শিশুরা মায়ের কাছে বেশি থাকায় তিনি আক্রান্ত হলে সন্তানেরও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
তবে নির্দেশিকা এলেও এখনই মা বা প্রসূতিদের টিকাকরণ শুরু করা মুশকিল বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের ধারণা। আধিকারিকের অনেকের দাবি, এর প্রধান কারণ টিকার অপ্রতুলতা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কিছু ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। তবে সাধারণের জন্য জেলায় প্রথম ডোজ় প্রায় বন্ধ। রাজ্য থেকেও এখন দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য টিকা পাঠানো হচ্ছে। দ্বিতীয় ডোজ় টিকা দেওয়ার সংখ্যা বাড়াতে চাইছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের ফারাক কমার পরেই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মায়েদের টিকাকরণের পরিকল্পনা হবে বলে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘মঙ্গলবার টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।