মানা হচ্ছে না সতর্কতা। নিজস্ব চিত্র
সরকারি স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী, বাইরে বেরোলে ‘মাস্ক’ পরা বাধ্যতামূলক। কিন্তু দুর্গাপুরের বাসগুলিতে সে স্বাস্থ্য-বিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ‘মাস্ক’ ছাড়াই যাতায়াত করছেন যাত্রীদের একাংশ। ফলে, করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে বলে মনে করছেন শহরবাসীর একাংশ।
শহরবাসীর অভিজ্ঞতা, দুর্গাপুরে মিনিবাস ও বড় বাস— দু’ধরনের বাসেই দেখা গিয়েছে যাত্রীরা সে ভাবে ‘মাস্ক’ ব্যবহার করছেন না। মিনিবাসে যাত্রী কম। পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব রয়েছে। তবে বড় বাসে পাশাপাশি আসনে বসে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে যাত্রীদের। কোনও আসনে এক জনের মুখে ‘মাস্ক’ রয়েছে, অন্য জনের নেই। কোনও আসনে আবার দু’জনের কেউই ‘মাস্ক’ পরেননি, এমন ছবিও দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি বেনাচিতির প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ডে ৮বি রুটের একটি বাস থেকে নামতে দেখা গেল, ‘মাস্ক’ না পরা চার-পাঁচজন যাত্রীকে। তাঁরা জানালেন, বাসে ওঠার সময় কন্ডাক্টর বলেছিলেন, ‘মাস্ক’ পরে উঠতে। কিন্তু তাঁদের কাছে ‘মাস্ক’-ই নেই! দুর্গাপুরের একটি মিনিবাস মালিক সংগঠনের তরফে কাজল দে জানান, ‘মাস্ক’ ছাড়া মিনিবাসে যাত্রীদের উঠতেই দেওয়া হবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বাস-কর্মীদের। তা হলে ‘মাস্ক’ ছাড়া যাত্রীরা উঠছেন কী ভাবে? ওই বাসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মীর দাবি, যাত্রীদের অধিকাংশই ‘মাস্ক’ পরছেন। বাসে ওঠার সময় সবাইকেই ‘মাস্ক’ পরার আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু যাত্রী সংখ্যার কথা ভেবে ‘মাস্ক’ না থাকলে, জোর করে কাউকে নামিয়েও দেওয়া হচ্ছে না।
বাঁকুড়ার সোনামুখী থেকে দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডে আসা বড় বাসে সম্প্রতি দেখা গেল, অর্ধেকের বেশি যাত্রী ‘মাস্ক’ পরেননি। বাসের যাত্রী সুমিতা হেমব্রম বললেন, ‘‘এমনিতে ‘মাস্ক’ পরি। তবে দু’-তিন দিন হল, ‘মাস্ক’ ছাড়াই বাইরে বেরোচ্ছি। এলাকায় সংক্রমণের কোনও খবর নেই। ‘মাস্ক’ পরলে গরমে কষ্ট হয়।’’ সৌরভ দত্ত নামে এক যাত্রী আবার বলেন, ‘‘মাস্ক ছিল। নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন ‘মাস্ক’ কেনা হয়নি।’’
আইএনটিইউসি প্রভাবিত বড় বাসের কর্মী সংগঠনের নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বাসকর্মী ও যাত্রীদের মধ্যে লাগাতার সচেতনতা প্রচারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’’
মহকুমা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়মিত সব বাসে অভিযান চালানোর মতো পরিকাঠামো বা পরিস্থিতি বর্তমানে নেই। তাই সচেতনতা গড়ে তোলার উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। যদিও দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাসে স্বাস্থ্য-বিধি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে অভিযান হবে।’’