Quarantine Center

নিভৃতবাসে না থেকে বাড়িতে, বাড়াচ্ছে চিন্তা

লালারস সংগ্রহ ও রিপোর্ট পাওয়ার সময়ের ব্যবধান নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় ছিল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৪:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি

সিদ্ধান্ত হয়েছিল, দিল্লি, গুজরাত বা মহারাষ্ট্র থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিক বা যে কোনও মানুষকেই প্রথমে নিভৃতবাসে রেখে লালারস সংগ্রহ করা হবে। রিপোর্ট আসার পরে, ছাড়া হবে তাঁদের। কিন্তু তথ্য বলছে মানা হচ্ছে না সেই নিয়ম। সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলায় ন’জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ছ’জনই মহারাষ্ট্র থেকে এসেছেন। আর এক জন এসেছেন দিল্লি থেকে। তাঁদের প্রত্যেককেই নিভৃতবাস কেন্দ্র নয়, বাড়ি থেকেই পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর তুলে নিয়ে গিয়ে কাঁকসার ‘কোভিড-১৯’ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

Advertisement

জেলাশাসক বিজয় ভারতীর ব্যাখা, “উৎসবের সময়ে কিছু জনকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে থেকেই করোনা আক্রান্তের হদিস পাওয়া গিয়েছে। যাঁরা হোম কোয়রান্টিনে গিয়েছিলেন, তাঁদের আবার কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা হবে।’’ বাইরে থেকে রিপোর্ট করাতে হচ্ছে বলে কিছুটা দেরি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

লালারস সংগ্রহ ও রিপোর্ট পাওয়ার সময়ের ব্যবধান নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় ছিল জেলা প্রশাসন। সোমবার নিভৃতবাস থেকে ছাড়া পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ‘করোনা-পজ়িটিভ’ মেলায় সেই চিন্তা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত পর্যন্ত জেলায় ৯,৩১৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্যে রিপোর্ট এসেছে ৫,১৫৭ জনের। এখনও রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন ৪,১৬০ জন। এ দিনও হাজারের বেশি লালারসের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। যার মধ্যে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেই ৪০০টি নমুনা পাঠানো হয়েছে। অথচ, সে সব রিপোর্ট আসতে দেরি হচ্ছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রেরই দাবি।

Advertisement

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, ওই তিনটে রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিভৃতবাসে বড় জোর তিন দিন আটকে রেখে রিপোর্ট পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ, কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে দশ দিনে রিপোর্ট এসে পৌঁছচ্ছে। ওই সূত্রের দাবি, মহারাষ্ট্রের যে ছ’জনের করোনা ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্ট এসেছে, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগজনই পাঁচ দিন ধরে নিভৃতবাসে ছিলেন। একমাত্র জামালপুরের যুবক টানা ১০ দিন ধরে ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে ছিলেন।

জেলার নানা জায়গাতেই নিভৃতবাসের পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। নিভৃতবাসের পাঁচিল টপকে, গেট ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, ‘চাপে’ পড়েই ছাড়তে হয়েছে শ্রমিকদের। জেলা প্রশাসনের অনেক কর্তাই মনে করেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট না এলে পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা সম্ভব হবে না। কারণ, যত পরিযায়ী শ্রমিক আসবেন, তত নমুনা সংগ্রহ করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও কাঁকসার বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে নমুনা সংগ্রহ জমলেও সময়ে রিপোর্ট মিলবে না। তার জেরে ক্ষোভ বাড়বে নিভৃতবাসের মধ্যে থাকা পরিযায়ীদের। জেলাশাসকের দাবি, “দ্রুত রিপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement