প্রতীকী ছবি।
জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যাও চল্লিশ পেরিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে আজ, মঙ্গলবার থেকে পূর্ব বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকায় আশাকর্মী ও পুরসভা এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে ‘কো-মর্বিডিটি’ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করতে চলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যেক কর্মী নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র নিয়ে বাড়ি-বাড়ি যাবেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় যে ক’জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশের ‘কো-মর্বিডিটি’র সমস্যা ছিল। তাঁদের বেশিরভাগই প্রবীণ বাসিন্দা। আবার আক্রান্তদের মধ্যে যাঁদের উপসর্গ রয়েছে, তাঁদের অধিকাংশের অন্য নানা রোগ রয়েছে। রবিবার রাত পর্যন্ত জেলায় যে ২,৪৯২ জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে উপসর্গ রয়েছে ৩৪৮ জনের। উপসর্গহীন ২,১৪৪ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, আক্রান্তদের মধ্যে ১,৫৯৮ জন নিজের এলাকার বাইরে যাননি। তাঁরা কী ভাবে আক্রান্ত হলেন, তার সূত্রও এই সমীক্ষায় মিলতে পারে বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের ধারণা।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘কো-মর্বিডিটি আছে কি না জানতে আশাকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি যাবেন। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক বাসিন্দা ঠিক তথ্য দেবেন বলে আশা করছি।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আশাকর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জানতে চাইবেন, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, ডায়াবিটিস, শ্বাসকষ্ট, লিভারের সমস্যা, ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত কেউ রয়েছেন কি না। এর বাইরে অন্য কোনও রোগ রয়েছে কি না, তা-ও রয়েছে প্রশ্নসূচিতে। কত দিন ধরে আক্রান্ত হয়েছেন, ওষুধ কত দিন ধরে চলছে, সে সব তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। আশাকর্মীদের রিপোর্ট প্রতিদিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জমা পড়বে। তা বিশ্লেষণ করে কো-মর্বিডিটিতে আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে দাবি আধিকারিকদের।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মতে, বড় পরিসরে হতে চলা এই কাজের মাধ্যমে জেলায় কারা কো-মর্ডিবিটিতে আক্রান্ত, তা যেমন জানা যাবে, তেমনই কে কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, সেই সংক্রান্ত নথিও মিলবে। প্রত্যেক রোগীর ফোন নম্বর থাকায় প্রয়োজনে যোগাযোগও করা যাবে। সিএমওএইচ বলেন, ‘‘আমরা একেবারে নিচু স্তর থেকে কো-মর্বিডিটিতে আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারব। স্বাস্থ্যকর্মীরাও নজর রাখতে পারবেন।’’ তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি, আশা বা স্বাস্থ্যকর্মীরা ডেঙ্গি ও করোনা নিয়ে সচেতনতাও প্রচার চালাবেন বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)