মুরগির গাড়ি নিয়ে চলছে বিক্রি। নিজস্ব চিত্র
একশো টাকায় চারটে মুরগি! তাও খাঁচা থেকে পছন্দমতো বেছে নিতে পারবেন ক্রেতা। চৈত্র মাস পড়তেই করোনা-আতঙ্কে মুরগির ‘সেল’ শুরু হয়ে গিয়েছে বর্ধমানে।
সোমবার বর্ধমান শহরের সদরঘাট, বংপুর মোড় মুরগিবোঝাই গাড়ি ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ক্রেতারাও হাতের কাছে কম দামে মুরগি পেয়ে কিনেছেন দেদার। চিকিৎসকেরা বারবার জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সঙ্গে মুরগির মাংসের কোনও যোগ নেই। উচ্চ তাপমাত্রায় সুসিদ্ধ মাংস নিশ্চিন্ত হয়েই খাওয়া যেতে পারে।
বর্ধমানের নানা বাজারে এ দিন গোটা মুরগি বিকিয়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। আর কাটা মাংস বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। দু’এক জায়গায় দাম উঠেছে একশো টাকায়। আবার শহর লাগোয়া গ্রামাঞ্চলে মুরগি মিলেছে ৫০ টাকায়। অন্য সময় যে দোকানে লাইন পড়ে যায় মাংস কেনার, সেখানে এখন মাছি তাড়াচ্ছেন দোকানদার। ঘুরে ঘুরে মুরগি বিক্রি করা ব্যবসায়ী শানে আলম খানের দাবি, যা দিন পড়ছে একশো টাকায় হয়তো দশটা মুরগি দিতে হবে।
কিন্তু এত কম দামে মুরগি দিচ্ছেন কী ভাবে? ওই বিক্রেতার দাবি, মুরগির মাংসের কেজি কার্যত ৩০-৪০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অথচ বিক্রি না হলেও মুরগিকে প্রতিদিন খাবার দিতে হয়। সেই খাবার মেলে ৫৫ টাকা কেজিতে। ফলে দিনের পর দিন লোকসানের বোঝা বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘‘দোকানের খরচ, কর্মচারীর মাইনে, সংসারের খরচ সব দিক সামলানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। তাই এভাবেই ক্ষতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।’’ এ দিন রীতিমতো মাইক বাজিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ান তিনি।
জলের দরে মাংস পেয়ে খুশি শেহনাজ বেগম, প্রদীপ মণ্ডলেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘সব জায়গায় শুনছি মুরগির মাংস খেলে করোনা হয় না। তাই আমরা খাচ্ছি। আর এত কমে মাংস পেলে আরও বেশি করে খাব।’’ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক তাপস ঘোষও বলেন, ‘‘মুরগির মাংস খেলে যে করোনাভাইরাস হয়, এমন ঘটনা পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে রান্না করলে মুরগির মাংস সম্পূর্ণ নিরাপদ।’’