ডুবুরডিহিতে পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
করোনা সতর্কতায় রাজ্যের সীমানা এলাকার চেকপোস্টগুলিতে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। ভিন্ রাজ্য থেকে আসা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। রবিবার মাঝরাত থেকে সেই নিয়ন্ত্রণ চলল কুলটির ডুবুরডিহি চেকপোস্টেও। যাঁরা ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছেন, তাঁদের সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ মোতায়েন ছিল। স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ১২টা থেকে ডুবুরডুহি চেকপোস্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ে যে সমস্ত ট্রাক, ডাম্পার যাতায়াত করছে, তাদের ছাড়া হচ্ছে। তা-ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরে। যাঁরা অন্যত্র বেড়াতে গিয়েছিলেন, সেই সব পর্যটকদের বাস ও গাড়িগুলি ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, চালক, যাত্রী প্রত্যেককে নামিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই সীমানা পেরোতে দেওয়া হচ্ছে। অন্য কোনও যানবাহন চলতে দেওয়া হচ্ছে না।
সোমবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চেকপোস্টের এক দিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটি দিক দিয়ে যাতায়াত করছে গাড়িগুলি। পরীক্ষা করে এক-একটি গাড়ি ছাড়া হচ্ছে। তবে চেকপোস্টে পরীক্ষার সময়ে কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়েনি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ডেপুটি সিএমওএইচ (২) অনুরাধা দেব বলেন, ‘‘নির্দেশমতো কাজ চলছে। রূপনারায়ণপুর, চিত্তরঞ্জন ১ নম্বর ও বারাবনির রুনাকুড়া ঘাট সীমানায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও রয়েছেন।’’ তিনি জানান, সোমবার আসানসোল জেলা হাসপাতালের আইসোলেশনে নতুন করে কেউ ভর্তি হননি। ভর্তি থাকা তিন জনের চিকিৎসা চলছে। ‘হোম কোয়রান্টিনে’ অনেকে রয়েছেন। তবে সেই সংখ্যা কত তা জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানাতে পারেনি।
করোনা নিয়ে সতর্কতার জন্য পুলিশের তরফে সীমানা এলাকায় মাইকে প্রচার করে সাধারণ মানুষজনকে সচেতন করা হচ্ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই প্রথমে স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করা হচ্ছে। ডেপুটি সিএমওএইচ (২) জানান, চিকিৎসকেরা যেমন পরামর্শ দেবেন তা মেনে চলতে হবে। কেউ নির্দেশ না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন বিকেলে আসানসোল পুরসভার তরফে জানানো হয়, করোনা-পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের জন্য দু’টি টোল-ফ্রি নম্বর চালু করা হচ্ছে। যে কোনও রকম সহায়তার জন্য এই দু’টি নম্বরে ফোন করতে পারেন বাসিন্দারা। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, আসানসোল পুরসভার নেতৃত্বে কালোবাজারি রুখতে টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন। মেয়র আরও জানান, ‘লকডাউন চলাকালীন’ পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডকে ৭টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক অঞ্চলের জন্য একটি স্বাস্থ্য-দল গড়া হয়েছে। প্রতিটি দলে পুরসভা ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকবেন।