কুলটিতে ঝাড়খণ্ড সীমানার চেকপোস্টে হয়নি স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা। সোমবার সকালে। ছবি: পাপন চৌধুরী
করোনাভাইরাস ঠেকাতে রাজ্যের সীমানা এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের অধীনে থাকা চেকপোস্টগুলিতে নজরদারি শুরু করা হয়েছে। কিন্তু নির্দেশিকা জারির ৭২ ঘণ্টা পরেও আসানসোল পুরসভার তরফে কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, আজ, মঙ্গলবার থেকেই বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পশ্চিম বর্ধমানে ঝাড়খণ্ড সীমানায় পাঁচটি আন্তঃরাজ্য প্রবেশদ্বার রয়েছে। শনিবার জেলা প্রশাসন জানিয়েছিল, ওই এলাকাগুলিতে বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। মূলত ভিন্ রাজ্য থেকে আসা মানুষজনের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। পুলিশের উপস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এই কাজ করবেন। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) অনুরাধা দেব জানান, ওই পাঁচটি সীমানার মধ্যে চিত্তরঞ্জনের ১ নম্বর রেলগেট, রূপনারায়ণপুরে বিহার রোড ও বারাবনির রুনাকুড়া ঘাট এলাকায় অভিযান চালানোর কথা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। কুলটির বরাকর ও ডুবুরডিহি সীমানা এলাকা আসানসোল পুরসভার অধীনে। সেখানে অভিযানের দায়িত্ব পুরসভার।
কিন্তু সোমবারও পুরসভা সেই কাজ শুরু করতে পারেনি। এ দিন ওই দুই এলাকায় গিয়ে কোনও স্বাস্থ্যকর্মীকে দেখা যায়নি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই যাতায়াত করেছেন বহু মানুষ। পুরসভার বাম পরিষদীয় নেতা তাপস কবির বক্তব্য, ‘‘সরকার নির্দিষ্ট কারণেই সীমানা অঞ্চলে দ্রুত নজরদারির পরামর্শ দিয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের সেই পরামর্শ মেনে চলা উচিত ছিল।’’
কেন এখনও নজরদারি শুরু করা গেল না? পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক দীপক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিছু পরিকাঠামোগত খামতি থাকায় শুরু করা যায়নি। তবে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকেই কাজ শুরু হবে।’’ পুরসভার একটি সূত্রের দাবি, উপযুক্ত সংখ্যায় স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় সমস্যা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের চটজলদি প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে নামানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগত বলেন, ‘‘যে ভাবেই হোক, মঙ্গলবার থেকে অভিযান শুরু হবে।’’
তবে এ দিন বারাবনি, সালানপুরে বাকি তিন সীমানা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে। বারাবনির বিএমওএইচ সৌরভকান্তি বল বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ পালন করা হচ্ছে।’’ সালানপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক অনিমেষ মাজি বলেন, ‘‘আমি দু’টি জায়গায় নজরদারি করছি।’’ তাঁরা জানান, যাঁরাই এ রাজ্যে ঢুকছেন, তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কোনও রোগের উপসর্গ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে। সন্দেহজনক কিছু না থাকলে তাঁদের কাছে মুচলেখা লিখিয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। সোমবার জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জেলায় প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।’’