বিধায়কের অনুষ্ঠানে হাজির ভাতারের বিডিও দেবজিৎ দত্ত (নীল শার্ট পরা)। —নিজস্ব ছবি।
দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানেই হাজির ভাতারের বিডিও দেবজিৎ দত্ত। দলীয় অনুষ্ঠানে কেন হাজির বিডিও? বিতর্ক শুরু হতেই বিডিওর সাফাই, কোনও দলীয় অনুষ্ঠান নয়, অরাজনৈতিক মঞ্চে গিয়েছেন তিনি! তবে তাঁর সাফাইয়ের পরেও বিতর্ক থামছে না। প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
শনিবার ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর উদ্যোগে দুর্গাপুজো উপলক্ষে উপহার বিলির আয়োজন করা হয়েছিল। ভাতার হাইস্কুল মাঠে মঞ্চ বাধা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মানগোবিন্দ ছাড়াও জেলার এক ঝাঁক তৃণমূল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। সেখানে দেখা গেল দেবজিৎকে। বিরোধীদের প্রশ্ন, বিধায়কের অনুষ্ঠানে শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা থাকবেন, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সরকারি আধিকারিক হয়ে সেই মঞ্চে কেন থাকবেন বিডিও?
বিরোধীরা বিডিওর উপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, ‘‘কোনটা সরকারি আর কোনটা তৃণমূলের অনুষ্ঠান, সব গুলিয়ে ফেলছেন বিডিও।আসলে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার লোভে আধিকারিকেরা নীচে নামতে নামতে শেষ ধাপে নেমেছেন।’’ যদিও বিরোধীদের কথায় কান দিতে নারাজ দেবজিৎ। তিনি জানান, এটা বিধায়কের অনুষ্ঠান। একে বারে অরাজনৈতিক মঞ্চ। সেখানে কোথাও তৃণমূলের চিহ্ন ছিল না।
বিডিও অরাজনৈতিক মঞ্চ বলে সাফাই দিলেও বিরোধীদের দাবি, অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার, কাটোয়ার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোঁয়ার, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রূপালি সাহা, সহ-সভাপতি বাসুদেব যশ-সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। এমনকি রবীন্দ্রনাথের বক্তব্যের অংশ তুলে বিডিওকে নিশানা করেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, শনিবারের অনুষ্ঠানে কাটোয়ার বিধায়ক বার বার বলেছেন, ‘‘ভাতার ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।’’ যদি অরাজনৈতিক মঞ্চ হয়, তবে কেন তৃণমূলের নাম নেওয়া হল? এই বিষয়ে বিডিও দেবজিতের সাফাই, ‘‘উনি (রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়) ভুল করে মুখ ফোসকে বলেছেন।’’
উল্লেখ্য, মাত্র কয়েক দিন আগেই ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ পুজোর অনুদান নিয়ে বেঁফাস মন্তব্য করেছিলেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, যদি কেউ পুজোর অনুদান নেয়,তবে তাকে পুজো মণ্ডপে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি টাঙাতে হবে। এই নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মানগোবিন্দকে সতর্ক করেছিলেন। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই তাঁর আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিডিওর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।