ঘরে-বাইরে বিতর্ক, বহিষ্কৃত অলোক-রাজু

নেতৃত্বে থাকাকালীন বারবার বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল দুই নেতার। শেষমেশ সেই দুই নেতা, অলোক দাস ও রাজু অহলুওয়ালিয়াকে বৃহস্পতিবার দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১৫
Share:

বাঁ দিকে, রাজু অহলুওয়ালিয়া। ডান দিকে, অলোক দাস। —ফাইল চিত্র।

নেতৃত্বে থাকাকালীন বারবার বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল দুই নেতার। শেষমেশ সেই দুই নেতা, অলোক দাস ও রাজু অহলুওয়ালিয়াকে বৃহস্পতিবার দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। বহিষ্কারের খবর চাউর হতেই তৃণমূল কর্মীদের একাংশের ধারণা, প্রকাশ্যে বা অন্দরে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ ওঠার ফলেই এই দু’জনকে ছেঁটে ফেলা হল। যদিও শুক্রবার বহিষ্কৃত দুই নেতাই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

একদা সিপিএমের পরিবহণ কর্মী সংগঠনের কর্মী ছিলেন রাজুবাবু। তাঁকে ১৯৯৫ সালে সংগঠন থেকে সরিয়ে দেয় সিপিএম। ১৯৯৮ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালে আসানসোল সাবডিভিশনাল মোটর ট্র্যান্সপোর্ট ওয়ার্কাস ইউনিয়ন তৈরির নেপথ্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তিনি। ২০০৩ সালে ওই সংগঠনটিকে অনুমোদন দেয় আইএনটিটিইউসি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বছর খানেক ধরেই রাজুবাবুর সঙ্গে গোলামাল চলছিল মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই অভিজিৎবাবুর সঙ্গে। অবস্থা চরমে ওঠে চলতি বছরের ৫ অগস্ট। ওই দিন বাসকর্মীদের কাছ থেকে অভিজিৎবাবুর অনুগামীরা ‘তোলা’ তুলছে বলে অভিযোগ করেন রাজুবাবু। অভিযোগ, রাজুবাবুর উপরে হামলাও চালানো হয়। এর প্রতিবাদে গোটা মহকুমায় কয়েক ঘণ্টার জন্য বাস চলাচল বন্ধ করে দেন রাজুবাবুর অনুগামীরা। এরপরেই দলের একটি অংশ বারবার রাজুবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বহিষ্কারের দাবি তুলতে থাকে। চলতি বছরের অগস্টেই তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি ভি শিবদাসন রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে জেলার সমস্ত শ্রমিক সংগঠন ভেঙে দেন। এরপরে থেকেই রাজুবাবু দলে কার্যত একঘরে হয়ে যান বলে খবর। শুক্রবার রাজুবাবু যদিও বলেন, ‘‘দলের শাস্তি মাথা পেতে নিচ্ছি। আমি নিজের সত্য-নিষ্ঠার প্রমাণ দিয়েই দলে ফিরব।’’

Advertisement

অন্য দিকে বিভিন্ন গোলমালে বারবারই নাম জড়িয়েছে জামুড়িয়ার তৃণমূল যুব নেতা অলোক দাসেরও। বছর দেড়েক আগে সাইডিংয়ের কাজ নিয়ে বিবাদের জেরে শ্যাম-গোষ্ঠীর কারখানায় অলোকবাবুর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ ওঠায় তাঁকে প্রথম বার দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগে ফের দলে ফেরানো হয় তাঁকে। তবে তারপরেও বিধানসভা ভোটে জামুড়িয়ায় জিততে পারেননি তৃণণূল প্রার্থী শিবদাসন। তৃণমূলের একটি সূত্রের ধারণা, এই হারের পিছনে অলোকবাবুর অন্তর্ঘাত থাকতে পারে। শিবদাসন যদিও বলেন, ‘‘অলোকের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে শুধরনোর সুযোগ দিয়েও ফল হয়নি।’’ যদিও শুক্রবার অলোকবাবু দাবি করেন, ‘‘দলবিরোধী কাজের অভিযোগ মিথ্যা। আসলে যিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁর জেতার মতো ব্যক্তিত্ব ছিল না।’’

—এই বিবাদের ফলে তৃণমূলের একাধিক কর্মীর আশঙ্কা, এলাকায় ও পরিবহণ ক্ষেত্রে দলের অন্দরে প্রভাব পড়তে পারে। যদিও তেমন কিছু ঘটবে না বলেই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement