জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ফাইল ছবি।
বিরোধীরা এখনও ২০১৭-র দুর্গাপুর পুরভোটে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ করে থাকেন। তাঁদের অভিযোগের মূল তির ছিল তৃণমূলের তৎকালীন জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারির দিকে। তৃণমূল কোনও দিনই অভিযোগ মানেনি। তবে সোমবার দুর্গাপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কার্যত সে সন্ত্রাস করতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন দাবি করে, তিনি ‘অনুতপ্ত’ বলে মন্তব্য করলেন জিতেন্দ্র। ঘটনা হল, জিতেন্দ্র বর্তমানে বিজেপি নেতা। জিতেন্দ্রের এই মন্তব্য ঘিরে শহর দুর্গাপুরে তৈরি হয়েছেরাজনৈতিক তরজা।
২০১৭-য় পুরভোটের দিন তৃণমূল ও জিতেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। ফলাফলে দেখা যায়, পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ডেই জিতেছিল তৃণমূল। এই ফলও ‘সন্ত্রাসের জয়’ বলে উল্লেখ করে বিরোধীরা। যদিও, তৃণমূল কোনও দিনই এই অভিযোগে আমল দেয়নি।
এ দিন জিতেন্দ্র বিদ্যাসাগর অ্যাভিনিউয়ে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন জিতেন্দ্র। সেখানে পশ্চিম বর্ধমানের নাম বদলে আসানসোল-দুর্গাপুর করা এবং দ্রুত দুর্গাপুর পুরভোট করার দাবি জানান তিনি। সে প্রসঙ্গেই সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে প্রশ্ন করেন ২০১৭-র ভোট নিয়ে তিনি অনুতপ্ত কি না। উত্তরে জিতেন্দ্র বলেন, “একশো বার, একশো বার, একশো বার। তৃণমূলের কথায় অনেক পাপ করতে হয়েছে। আমাকে এক মাস আগে দুর্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল।” তাঁর দাবি, এলাকায় সমীক্ষা করতে গিয়ে শুনতে হয়েছিল, শংসাপত্র পেতে গেলেও টাকা দিতে হয়। এর পরেই জিতেন্দ্রের সংযোজন: “আমাকে বলা হয়েছিল, সবাইকে জেতাতে হবে। এ ধরনের লোকেদের কী ভাবে জেতানো সম্ভব? ফলে অনেক পাপ, অন্যায় করতে হয়েছে। আমি সে জন্য অনুতপ্ত। দুর্গাপুরের মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।”
জিতেন্দ্রের এই মন্তব্যের পরে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, “মাননীয়ার নির্দেশে, জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং দুই মন্ত্রীর সহযোগিতায় গত পুরভোটে ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছিল। সেটাই এ দিন উনি বললেন। তবে উনি যতই বাল্মীকি সাজার চেষ্টা করুন, ওঁকে দস্যু রত্নাকর হয়েই থাকতে হবে।” বিজেপির অন্যতম জেলা সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “দুর্গাপুরে যে ভোট হয়নি, সেটাই বলতে চেয়েছেন উনি।” তবে জিতেন্দ্রের এই বক্তব্যে আমল দেয়নি তৃণমূল। দলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “উনি তৃণমূলে উচ্চ স্তরে ছিলেন, ক্ষমতাবান ছিলেন। সেই ক্ষমতা পাচ্ছেন না বলে এখন নানা রকম বিবৃতি দিচ্ছেন।”