গ্রামের ভিতরে রঙচঙে একতলা বাড়ি। সামনের বারান্দার দেওয়ালে, থামে মার্বেল বসানো। ছাদে মোবাইল টাওয়ার ও কেবল্ পরিষেবার অ্যান্টেনা লাগানো রয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের ভিতরে রঙচঙে একতলা বাড়ি। সামনের বারান্দার দেওয়ালে, থামে মার্বেল বসানো। ছাদে মোবাইল টাওয়ার ও কেবল্ পরিষেবার অ্যান্টেনা লাগানো রয়েছে। অথচ, এই বাড়ির সদস্য তো বটেই, তাঁর কয়েক জন পরিজনেরও নাম রয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র তালিকায়। এমন বাড়ি থাকা সত্ত্বেও বর্ধমান ১ ব্লকের রায়ান ১ পঞ্চায়েতের বিজয়রাম গ্রামের তৃণমূল সদস্যা ফতেমা বিবির নাম কী করে ওই প্রকল্পে উঠল, তা নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। ওই সদস্যার দাবি, তিনি ও তাঁর পরিজনেরা আবাস প্রকল্প থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য ব্লক প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। বিডিও (বর্ধমান ১) অভিরূপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁদের নাম বাদ যাবেই। যোগ্যরাই বাড়ি পাবেন।’’
ওই পঞ্চায়েত সদস্যার মতো রায়না ২ ব্লকের তৃণমূল সভানেত্রী পার্বতী ধাড়া, রায়না ১ ব্লকের নাড়ুগ্রামের এক তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়েরাও আবাস প্রকল্প থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনে আবেদন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, প্রশাসন নজরদারি চালানোয় জেলার নানা জায়গায় এমন ঘটনা সামনে আসছে। তা না হলে সব সুবিধাই তৃণমূল নেতাদের পকেটে যেত, দাবি তাঁদের।বর্ধমান ১ ব্লকের ওই পঞ্চায়েত সদস্যার দাবি, তাঁর ও পরিজনদের আগে অ্যাসবেস্টস বা খড়ের চালের মাটির বাড়ি ছিল। ২০১৮ সালে সমীক্ষার সময়ে সেই বাড়ির ছবির সূত্রেই তাঁদের নাম প্রকল্পের তালিকায় ওঠে। পরে বাড়ি পাকা হয়, দাবি তাঁদের।
পঞ্চায়েত সদস্যার দাবি, ‘‘আমি এক জন জনপ্রতিনিধি। ২০২০ সালের শেষ দিকে আমার পাকা বাড়ি হয়েছে। তার পরেও কী ভাবে আবাস প্রকল্পের বাড়ি নিতে পারি? ব্লকে চিঠি দিয়ে আমার ও পরিজনদের নাম বাতিলের দাবি করেছি।’’স্থানীয় বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘গরিব মানুষদের বঞ্চিত করে তৃণমূল নেতারা নিজেদের নাম ঢুকিয়েছিলেন। কেন্দ্র চেপে ধরায় বিষফোঁড়ার মতো সব বেরিয়ে পড়ছে।’’ তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হাসানের অবশ্য দাবি, ‘‘পাকা বাড়ি থাকলে প্রকল্প থেকে নাম বাদ যাবে, তা তো বলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এ নিয়ে হইচই অর্থহীন।’’