অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার উপভোক্তা তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ গিয়েছে স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর জন্য— সোমবার সকালে এমন অভিযোগ করে কালনার সাতগাছি পঞ্চায়েতের পূর্ণলক্ষ্মীতলা এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কিছু বাসিন্দা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ নিজের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পৌঁছন আরুতি বারুই নামে এক কর্মী। এর পরেই গ্রামবাসীর একাংশ কেন্দ্রের সামনে ভিড় করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ওই কর্মীকে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। যদিও কিছু ক্ষণের মধ্যেই দরজা খুলে দেওয়া হয়। তবে বিক্ষোভ চলে দীর্ঘ সময় ধরে। তাঁদের দাবি, আরুতি আবাস যোজনার সমীক্ষায় বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলেন। তার পরেও এলাকার প্রায় ৩০ জন যোগ্য উপভোক্তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী দ্রুত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। পুলিশ সেখানে গেলে তাকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, এই এলাকার বহু মানুষ হকারি, শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। যাঁদের আয় অত্যন্ত কম। টিনের ও টালির চালের ঘর বেশির ভাগের। নিজেদের সামর্থ্য নেই পাকা বাড়ি করার। দাবি, ঠিক সমীক্ষা হলে গরিব পরিবারগুলির নাম বাদ যেত না। এর পর দীর্ঘ ক্ষণ পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর আলোচনা চলে। অবশেষে বিক্ষোভ ওঠে।
নিজের ভাঙা ঘর দেখিয়ে লক্ষ্মী তালুকদার বলেন, “হকারি করে টেনেটুনে সংসার চলে। টিনের চাল ভেঙে পড়ছে। বৃষ্টি হলে বাড়ির পাশে হাঁটু-জল জমে যায়। তাও আবাস যোজনার তালিকায় নাম নেই। অন্যায় হচ্ছে আমাদের সঙ্গে।”
আরও এক বধূ গৌরী ভক্ত বলেন, “স্বামী ভ্যানে ফল বিক্রি করে। ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সারানোর টাকা জোগার করতে পারছি না। আবাস তালিকার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম।” তাঁদের সকলেরই দাবি, সমীক্ষা ঠিক হয়নি। নতুবা তালিকায় তাঁদের নাম থাকত। এর আগেও দেখা গিয়েছে, আবাস যোজনার তালিকা নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হলেই নানা সময়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। যদিও সমীক্ষায় তাঁদের সরাসরি ভূমিকা থাকে না।
তবে ফের এই ঘটনার পর ওই কর্মী আরুতি বলেন, “আমি সমীক্ষা করিনি। যিনি করেছেন, তাঁকে বাড়ি চিনিয়ে দেওয়াটুকুই ছিল আমার কাজ। তা সত্ত্বেও আমাকে দায়ী করে ঘরের দরজা বন্ধ করে গালিগালাজ করা এবং হুমকি দেওয়া হয়েছে।” এলাকার অন্য অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কথায়, “আমাদের সার্ভে করার এক্তিয়ার নেই। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ যদি ঘর না পেয়ে আমাদের কাঠগড়ায় তোলেন, তা হলে বিষয়টি বেশ চিন্তার।”
কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল জানান, কী হয়েছে খোঁজ
নেওয়া হচ্ছে।