কংগ্রেস নেতার পুড়ে যাওয়া গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
গাড়ি ভাড়া খাটিয়ে তাঁর রোজগার। ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’য় সেই গাড়ি হারিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুললেন পূর্ব বর্ধমানের এক কংগ্রেস নেতা। শেখ আলিম নামে ওই কংগ্রেস নেতার অভিযোগে শোরগোল এলাকায়। যদিও সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে তৃণমূল।
গত পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের হয়ে ভাতার গ্রাম পঞ্চায়েতের বালসিডাঙ্গা গ্রামে ২২২ নম্বর বুথে প্রার্থী হয়েছিলেন আলিমের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বেগম। ভোটে তিনি পরাজিত হন। আলিমের দাবি, লোকসভা ভোটের পর সেই রোষ এসে পড়েছে তাঁর উপর। রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে তাঁর গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে গাড়িটি। গাড়ির ভিতরে রাখা ছিল ভোটার এবং আধার কার্ড, গাড়ির ব্লু বুক, লাইসেন্স, বিমার কাগজপত্র ইত্যাদি। সে সবই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। গাড়ির মালিক তথা চালক আলিম বলেন, ‘‘রাস্তা ছোট হওয়ার কারণে আমার বাড়ি পর্যন্ত চারচাকার গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। তাই বাড়ি থেকে খানিকটা দূরেই প্রতিবেশী এক জনের খামারে রাতে গাড়িটি রাখি। রবিবার দুপুরেও গাড়িটি ওখানে রেখেছিলাম। গভীর রাতে আমার এক পরিচিত ভাতার-সামন্তী রোড ধরে যাওয়ার সময় দূর থেকে আগুন দেখতে পায়। কাছে গিয়ে দেখে আমার গাড়িটি জ্বলছে। ও সঙ্গে সঙ্গে আমায় ফোন করে জানায়। আমি ছুটে গিয়ে দেখি, গাড়ির ছাদে আগুন জ্বলছে। কিছু ক্ষণের মধ্যে গোটা গাড়িতে আগুন ধরে যায়। চোখের সামনে দাউদাউ করে জ্বলে গেল আমার গাড়িটা।’’
রোজগারের একমাত্র উৎস হারিয়ে ইদের দিনে কান্নায় ভেঙে পড়েছে আলিমের গোটা পরিবার। তারা জানাচ্ছে, ওই গাড়ি ভাড়া খাটিয়ে যা উপার্জন হত, তাই দিয়ে চার জনের সংসার চলত। আলিম, তাঁর স্ত্রী এবং তিন ছেলে ছুটে গিয়েছিলেন গাড়ির আগুন নেভাতে। পারেননি। ব্যর্থ হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে লোকজনকে ডাকাডাকি করেন। প্রতিবেশীরা বালতি করে জল এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তত ক্ষণে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে গাড়িটি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি এবং আলিমের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হোক। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা গৌরব সম্মাদার বলেন, ‘‘রাশ আলগা প্রশাসনের। তাই তারা হিংসা, মারামারি আটকাতে পারছে না। আমাদের দলীয় কর্মীর গাড়ি পুরিয়ে দিয়েছে যারা, প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি, তাদের গ্রেফতার করা হোক।’’ তাঁর ইঙ্গিত শাসকদলের দিকে। যদিও কংগ্রেস কর্মী আলিম নির্দিষ্ট কারও নাম করে অভিযোগ জানাননি। ইতিমধ্যে পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ।