বিধায়ককে নিয়ে টানাটানি, দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এ দিন ওই গ্রামে বিকেলে কর্মসূচিটি হওয়ার কথা ছিল। সে জন্য পঞ্চায়েত অফিসের সামনে ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা কানাইলাল চৌধুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫০
Share:

চলছে কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি হবে গ্রামে। তার জন্য ব্যবস্থাও হয়েছে। তবে দু’টি। কাদের ব্যবস্থাপনায় হওয়া কর্মসূচিতে আগে যাবেন খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ, তা নিয়ে তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে প্রকাশ্যেই গোলমাল বাধল। রবিবার গলসি ২ ব্লকের সাটিনন্দী পঞ্চায়েতের বেলগ্রামের ঘটনা।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এ দিন ওই গ্রামে বিকেলে কর্মসূচিটি হওয়ার কথা ছিল। সে জন্য পঞ্চায়েত অফিসের সামনে ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা কানাইলাল চৌধুরী। এ দিকে, পাঁচশো মিটার দূরেই গ্রামে ঢোকার মুখে শিরিষতলায় তৈরি ছিল দলের ‘অন্য শিবিরও’। এখানে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন কিষাণলাল রায়, সুদেবকুমার রায়েরা।

বিধায়ক আসছেন, বিকেল ৫টা নাগাদ এই খবর চাউর হয় দলের নেতা, কর্মীদের মধ্যে। সেই মতো গ্রামের ঢোকার কিছুটা আগে কানাইলালবাবু মালা পরিয়ে বিধায়ককে স্বাগত জানিয়ে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কানাইলালবাবুর অভিযোগ, ‘‘গ্রামে ঢোকার মুখে কিষাণলাল, বাসুদেব এবং কয়েক জন বহিরাগত বিধায়কের গাড়ি আটকে দাবি করেন, তাঁদের ব্যবস্থাপনায় হওয়া কর্মসূচিতেই তাঁকে যেতে হবে। আমরা প্রতিবাদ করলে গালাগালাজ, হেনস্থা করা হয়।’’ দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

Advertisement

গোটা পর্বে বিধায়ককে অদূরেই এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে শোনা যায়, ‘‘আলোচনা করে ঠিক করুন, কোথা থেকে কর্মসূচি শুরু হবে।’’ কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি বলেই জানা যায়। বিধায়কের সামনেই চলতে থাকে অশান্তি। শেষমেশ আধ ঘণ্টা বাদে গ্রাম ছাড়েন বিধায়ক।

এই ঘটনার পরেই দু’পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। কানাইলালবাবুর অভিযোগ, ‘‘কর্মসূচি ভেস্তে দিতেই পরিকল্পনা করে অশান্তি করেছে ওরা।’’ একই অভিযোগ করেন কিষাণলালবাবুরা এলাকায় ও তৃণমূলের অন্দরে যাঁর অনুগামী বলে পরিচিত, সেই নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বাসুদেব চৌধুরীও। কানাইলালবাবু এবং বাসুদেববাবু, দু’জনেরই দাবি, বিধায়ক তাঁদেরই কর্মসূচির ব্যবস্থা করার জন্য বলেছিলেন। বিধায়ক কোন্দলের কথা স্বীকার করেই অবশ্য দাবি করেন, ‘‘দু’পক্ষকেই আলোচনা করে ঠিক করতে বলেছিলাম। তা না করে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা, ভুল বোঝাবুঝি হল। পুরো ঘটনা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং ‘টিম পিকে’র কাছেও জানাব।’’

শেষমেশ অবশ্য জেলা নেতৃত্বের ‘নির্দেশে’ ঘণ্টা দুয়েক বাদে ফের গ্রামে এসে কর্মসূচি পালন করেন বিধায়ক। সঙ্গে ছিল বড় পুলিশ বাহিনী। বিধায়কের কথায়, ‘‘নিজের মতো করেই কর্মসূচি পালন করলাম।’’ বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা কমিটির কোঅর্ডিনেটর তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘দলের কিছু কর্মীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement