ফাইল চিত্র।
দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বণিকসভা ‘রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স’। এই সভার পরিচালন সমিতির নির্বাচন আয়োজিত হবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বণিকসভার সদস্যেরা জানান, এখানে মূল লড়াই মূলত দু’টি ‘গোষ্ঠী’র। যদিও সভার মধ্যে সেই গোষ্ঠী দু’টির মাথা হিসেবে যে দু’জন পরিচিত, তাঁরা কোনও রকম দ্বন্দ্বের কথা মানছেন না।
বণিকসভা সূত্রে জানা যায়, মোট ২৩টি আসনের জন্য ৬১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। মঙ্গলবার ১৫ জন তা প্রত্যাহার করেছেন। এই পরিস্থিতিতে মোট ৪৬ জন লড়াইয়ে থাকছেন। ভোটার সংখ্যা, ৭৯৯ জন। সভার সদস্যদের একাংশ জানান, প্রার্থীরা মূলত দু’টি শিবিরে বিভক্ত। বিবদমান দুই গোষ্ঠীর মাথা বণিকসভার প্রাক্তন সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান এবং বিদায়ী সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া।
অতীতেও সভার অভ্যন্তরে একাধিক বার এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে নানা কারণে বিবাদ দেখা গিয়েছে বলে দাবি সদস্যদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে ভোট-ময়দানে এক পক্ষের হাতিয়ার তাদের কাজ। অন্য পক্ষ যদিও বিপক্ষের ‘ব্যর্থতা’কেই সামনে আনছে।
সভার অভ্যন্তরে রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত কয়েকজনের অভিযোগ, বণিক ভবনের ত্রিতল তৈরির কাজ চার বছর আগে শুরু হলেও তা এখনও শেষ হয়নি। ব্যবসায়ীদের ‘ট্রেড লাইসেন্স’-সহ নানা বিষয়ে সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে বিদায়ী পরিচালন সমিতি কিছু করতে পারেনি। পাশাপাশি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে না ঠিক ভাবে, অভিযোগ এমনও। সেই সঙ্গে রফতানি সংক্রান্ত আলোচনা আয়োজিত হলেও বাস্তবে রফতানিতে যোগ দেওয়ার ক্ষমতা নেই বেশির ভাগ সদস্যদের।
যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করছেন সন্দীপবাবুর অনুগামীরা। তাঁদের দাবি, গত দু’বছরে সদস্য সংখ্যা তিনশো বেড়েছে। গত বছর ট্রেড লাইসেন্স শিবির আয়োজন, কৃষি বিপণন ও লাইসেন্স-প্রক্রিয়া সরল করার জন্য আন্দোলন করার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। নিয়মিত কর আদায়, ‘শপ এস্টাব্লিশমেন্ট’ শিবির, প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক নিয়মিত আয়োজিত হচ্ছে বলে দাবি। সেই সঙ্গে ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করা এবং ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নিয়ে নিয়মিত বৈঠকের কথাও জানানো হয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থেকে বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে শিল্পোদ্যোগীদের সহযোগিতা করা হয় বলেও দাবি।
এই পরিস্থিতিতে সন্দীপবাবু ও রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবুদের কেউই তাঁদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি।