ভিড়: আসানসোল বাজারে।
মহালয়ার আগের রবিবার। আসানসোল বাজারে দেখা গেল ভিড়। তবে, অন্য বছরের তুলনায় এখনও ‘পুজোর বাজারের’ ভিড় যেন শুরু হয়নি দুর্গাপুর বাজারে। এমনটাই জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি, আসানসোল বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে জল ঢুকে গিয়েছিল গুদামে। তার জেরে জলে ভিজে গিয়েছে অনেক জামাকাপড়। সেগুলি অর্ধেক দামে বিক্রি করা হয়েছে এ দিন। সেই সঙ্গে, অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে কোভিড-বিধি মানতেও দেখা যায়নি বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের।
আসানসোলের বস্তিন বাজার এবং যাদব মার্কেটে থিকথিকে ভিড় দেখা গিয়েছে। ফিরদৌস আলম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, “অনেক দোকান এবং গুদামে জল ঢুকে যাওয়ায় জামাকাপড় ভিজে গিয়েছিল। প্রায় অর্ধেক দামে সেগুলি বিক্রি করা হয়েছে।” অর্ধেক দামে জামাকাপড় কিনতে পেরে খুশি রূপনারায়ণপুরের আস্তিক মণ্ডল, সেন-র্যালের বলদেব সিংহের মতো ক্রেতারা। তাঁরা বলেন, “ভাল মানের জামাকাপড় অর্ধেক দামে পেয়ে যাওয়ায় পকেটের সাশ্রয় হল।” ১৫০ টাকার একটি টি-শার্ট বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকায়। জামাকাপড়ের পাশাপাশি, অন্য নানা কিছুও অর্ধেক দামে বিক্রি হয়েছে। যেমন, ৯৫০ টাকা একটি ‘ব্ল্যাঙ্কেট’ ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তবে, বস্ত্র ব্যবসায়ী বিমল মিহারিয়ার প্রতিক্রিয়া, “গত কয়েক দিনের তুলনায় শনি ও রবিবার ভিড় হয়েছে বাজারে। আর ঝড়-জল না হলে, বস্ত্র ব্যবসায়ীরা হয়তো লাভের মুখও দেখবেন।”
এ দিকে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আসানসোল বাজারে কোভিড-বিধি মানতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বেশির ভাগ ক্রেতা মাস্ক পরেননি। দূরত্ববিধিও মানেননি বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বাজারে আসা নির্মলা ভান্ডারী, প্রদীপ মণ্ডলদের প্রতিক্রিয়া, “কোভিড-টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে অনেকেরই। তাই কোভিড নিয়ে আর আতঙ্কের তেমন কিছু নেই।” আসানসোলের পুর-কমিশনার নীতীন সিংহানিয়া বলেন, “বিভিন্ন সময়ে বাজার এলাকায় কোভিড-বিধি নিয়ে সচেতনতা প্রচার করা হয়েছে। ফের তা করা হবে।” বস্ত্র ব্যবসায়ী বিমল মিহারিয়া জানান, অধিকাংশ দোকানেই হাতশুদ্ধি দেওয়া হয়েছে। মাস্ক ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হয়নি ক্রেতাদের।
পাশাপাশি, দুর্গাপুরের নানা বাজার, শপিং মলে ভিড় দেখা গেলেও, অন্য বছরের তুলনায় তা কিছুই নয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তবে বিক্রি খারাপ হয়নি বলে তাঁরা জানান। বেনাচিতি বাজারের খুচরো ব্যবসায়ী রমাপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “মহালয়ার আগের রবিবার নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না অন্য বার। কিন্তু গত বারের মতো এ বারেও তা হল না।” একটি দোকানের কর্মী স্নেহাশিস রায় বলেন, ‘‘রবিবার বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।” ঘটনাচক্রে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুর্গাপুর স্টেশন বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, গত বছরের ‘স্টক’ এখনও শেষ হয়নি। তাই নতুন করে আর পোশাক মজুত করেননি।
এ দিকে, কলেজ পড়ুয়া রবীন বসু, প্রিয়াঙ্কা দাসেরা বলেন, “করোনা সংক্রমণের ভয় ফের বাড়ছে। তাই আমরা অনলাইনেই কেনাকাটা সারছি এ বছর।” তবে, দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে অন্তত অর্ধেক ক্রেতা, বিক্রেতা মাস্ক পরেননি। দূরত্ববিধিও রক্ষিত হয়নি বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে দুর্গাপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল বলেন, “আমরা সচেতনতা প্রচারের ব্যবস্থা করছি। বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে বাজারগুলিতে।” একই কথা জানান ‘দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সভাপতি কবি দত্ত।