(বাঁ দিকে) কল্পতরু মেলার প্রস্তুতি, বেহাল রাস্ত (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
আজ, সোমবার থেকে দুর্গাপুরে শুরু হচ্ছে ৪৩তম কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে মেলা। চলবে দশ দিন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো চত্বর সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পুলিশের পাশাপাশি থাকবেন মেলা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকেরাও। কিন্তু মেলা চত্বরে যাওয়ার অন্যতম রাস্তা হ্যানিম্যান সরণি বেহাল বলে অভিযোগ।
বর্তমানে এই মেলা আয়োজিত হয় দুর্গাপুরের কোকআভেন থানার গ্যামন ব্রিজ সংলগ্ন ময়দানে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেলায় বহু মানুষ আসেন হ্যানিম্যান সরণি হয়ে। কিন্তু টোল সংলগ্ন কিছুটা অংশে রাস্তা বেহাল বলে অভিযোগ। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর আগে এক বার মেরামত করা হয়েছিল। কিন্তু ফের তাপ্পি উঠে গিয়েছে। সাধারণত সন্ধ্যায় মেলায় যান তাঁরা। রাস্তা সারাই না হলে রাতে মেলায় যেতে সমস্যায় পড়তে হবে বলে অভিযোগ তাঁদের। পুর প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
অনেক আগে সাধুডাঙার কালিকানন্দ আশ্রমে কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে ১ জানুয়ারি থেকে ১০ দিন ধরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও সারদাদেবীর পুজো ও মেলা হত। কিন্তু জায়গা ছোট হওয়ায় মেলায় বেশি ভিড় হলে সমস্যা দেখা দিত। সেই সমস্যার সমাধানে ৪২ বছর আগে মেলা গ্যামন ব্রিজ সংলগ্ন ময়দানে তুলে আনা হয়।
১৯৭৭-এ বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ডিপিএলের পৃষ্ঠপোষকতায় চলা এই মেলায় যোগ হয় কৃষিমেলা, শিল্পমেলা, বইমেলা। ‘কল্পতরু’ শব্দটি পুরোপুরি সরিয়ে নতুন নাম হয় ‘দুর্গাপুর সাংস্কৃতিক মেলা’। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে আবার ফিরে আসে ‘কল্পতরু’ শব্দটি। মেলা পরিচালনা করে থাকে দুর্গাপুর সাংস্কৃতিক মেলা কমিটি।
আগে গ্যামন ব্রিজ সংলগ্ন ময়দানটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই পাঁচিল ভেঙে পড়ে। ফলে, নিরাপত্তার অভাব দেখা দেয় বলে অভিযোগ। মেলার আয় থেকে মেলা কমিটি কিছু দিন আগে বিশাল ময়দান পাঁচিল দিয়ে নতুন করে ঘেরার ব্যবস্থা করেছে। তা ছাড়া, প্রতি বছর মেলায় শৌচাগারের অপ্রতুলতা নিয়ে অভিযোগ করেন অনেকে। সেই সমস্যার সমাধানে মেলা কমিটি পুরুষদের জন্য পাঁচটি এবং মহিলাদের জন্য তিনটি স্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, বহু অস্থায়ী শৌচাগারও থাকবে।
মেলা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত প্রতি বছর ছ’শোর বেশি স্টল থাকে মেলায়। এ বারেও সেই সংখ্যক স্টলই থাকছে। এ ছাড়া থাকছে আলাদা কৃষিমেলা ও বইমেলা। মেলা কমিটির সদস্য কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশের পাশাপাশি কমিটির তরফে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বেচ্ছাসেবকেরা থাকবেন। সর্বক্ষণ দমকলের গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স এবং ‘মেডিক্যাল টিমের’ ব্যবস্থা থাকছে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি কলকাতা থেকে শিল্পীরাও আসবেন। মেলার উদ্বোধনে থাকার কথা মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, মলয় ঘটকের।