প্রতীকী ছবি।
চোদ্দো বছরের এক কিশোরীর ‘স্কোলিওসিস সার্জারি’ হল বর্ধমান শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতালের দাবি, জটিল এবং ব্যয়বহুল অস্ত্রোপচারটি হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে স্কোলিওসিস অস্ত্রোপচার সচরাচর হয় না। যদি ওঁরা এটা করে থাকেন, তা হলে প্রশংসাযোগ্য।’’
বর্ধমানের মেমারি থানার দুর্গাপুরের বাসিন্দা বাসুদেব মালিক ও সিদ্ধেশ্বরী মালিক খেতমজুরির কাজ করেন। তাঁদের বড় মেয়ে লক্ষ্মী মালিক চার বছর বয়স থেকে স্কোলিওসিস বা মেরুদণ্ডের বক্রতায় আক্রান্ত। ওই দম্পতি জানান, রোগের কারণে লক্ষ্মীর ডান কাঁধ নীচের দিকে ঝুঁকে থাকত। বিভিন্ন জায়গায় সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েও লাভ হয়নি।
অবশেষে বছরখানেক আগে গ্রামে একটি চিকিৎসা শিবিরে শল্য চিকিৎসক সৈকত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁদের। তিনিই বর্ধমান শহরের আলিশায় জাতীয় সড়কের পাশে ওই বেসরকারি হাসপাতালে তাঁদের আসার পরামর্শ দেন। সেখানেই চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষার পরে, দিন পনেরো আগে অস্ত্রোপচার হয় লক্ষ্মীর। এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ, দাবি চিকিৎসকদের। বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘটনার কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী ও তার পরিবারের সঙ্গে পরিচয়ও করান।
হাসপাতালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চিকিৎসক সৈকত সরকারের নেতৃত্বে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের প্রধান অদিতি বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পুরো টিম প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় অস্ত্রোপচার করেছে। দু’দিন পর থেকেই রোগী হাঁটাচলা শুরু করেছে।’’ সৈকতবাবু জানান, রোগীর কাঁধের সমস্যাও ঠিক করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বাইরে এই অস্ত্রোপচার করাতে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচ হত। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা রাজ্যে প্রথম বলেও দাবি করেছেন চিকিৎসক নাসিমা খন্দেকর।
বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘ছোট থেকেই মেয়েটা সোজা হয়ে হাঁটতে পারত না। এত বছর পরে, এই হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে মেয়ে সুস্থ হয়েছে। কোনও টাকা লাগেনি।’’ ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই দম্পতি।