অভিযোগোর বাক্স। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়ের (আবাস প্লাস) প্রস্তাবিত উপভোক্তাদের তালিকা খতিয়ে দেখবেন পুলিশ সুপারও। মঙ্গলবার বিকেলে এক বৈঠকে ঠিক হয়, প্রতিটি থানার ওসি, আইসিদের সঙ্গে পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন আবাস যোজনার প্রস্তাবিত তালিকার উপভোক্তারা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য কি না, সেই সমীক্ষা করবেন। কালনা মহকুমার একটি ব্লকের উপভোক্তাদের তালিকা পুলিশ সুপার দফতরে পৌঁছে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রতিটি থানাতেই প্রস্তাবিত উপভোক্তাদের তালিকা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের দাবি, ‘‘যোগ্য উপভোক্তারাই যাতে আবাস প্রকল্পের বাড়ি পায়, তার জন্য প্রশাসন পুলিশকে দিয়ে সমীক্ষা করাতে চাইছে। আমাদের হাতে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পুরো রিপোর্ট চলে এসেছে। সেই তালিকা ধরেই ওসি, আইসিরা দশ শতাংশ বাড়িতে সমীক্ষা করবেন। আর পুলিশ সুপার কালনার ওই ব্লকের ২০-২৫টির মতো বাড়ি সমীক্ষা করবেন।’’ বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে, নিচু তলা থেকে পাওয়া রিপোর্টে বাড়ি পাওয়ার উপযুক্ত ও অনুপযুক্ত, দু’রকমের তালিকা রয়েছে। দু’টি তালিকা মিলিয়ে যাচাই প্রক্রিয়া চলবে।
ওই বৈঠকের আগে মুখ্যসচিব জেলাশাসক, আবাস প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মুখ্যসচিবের স্পষ্ট নির্দেশ, যোগ্যরা যেমন আবাস প্রকল্প থেকে বাদ যাবেন না, তেমনি অযোগ্যরাও যাতে ওই প্রকল্পের সুবিধা না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলার সঙ্গে বৈঠকের পরে একাধিক বিডিওর দাবি, ‘‘তালিকা তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। শেষ হলেই থানাগুলিকে তালিকা দিয়ে দেওয়া হবে। যত বেশি সমীক্ষা হবে, তত ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে প্রস্তাবিত উপভোক্তাদের তালিকায় এক লক্ষ ৯২ হাজার জনের নাম রয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সরেজমিন সমীক্ষায় ১৮ হাজার উপভোক্তার নাম বাদ গিয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁদের নাম নিচুস্তরে সমীক্ষায় বাদ গিয়েছে, তাঁদের নাম আর গ্রামসভায় বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় গ্রামসভা বৈঠকে অনুপযুক্তদের নাম বাদ দেওয়া যেতে পারে। ওই সভায় প্রস্তাবিত তালিকা অনুমোদন করে জেলায় পাঠাতে হবে। সেখানে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কাজল রায় ও আবাস প্রকল্পের নোডাল অফিসার মৃণ্ময় মণ্ডলদের নিয়ে গঠিত কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। মৃণ্ময় জানান, সব উপভোক্তাদের সঙ্গে একশো শতাংশ জবকার্ডের লিঙ্ক করা হয়েছে।
জেলাশাসকের দফতরের সামনে সোমবার থেকে একটি ড্রপ বক্স বসানো হয়েছে। আবাস প্রকল্প সংক্রান্ত অভিযোগ জমা করা যাবে সেখানে। জেলা পরিষদ, মহকুমাশাসকের দফতর, ব্লক অফিসেও বসেছে ওই বাক্স। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সব মিলিয়ে সতেরোশো-র মতো অভিযোগ জমা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট করা হয়ে গিয়েছে বলেওপ্রশাসনের দাবি।