প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল কার্যালয়ে টাকা নিয়ে আধার কার্ড তৈরির অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের কালনায়। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) রবিবার দুপুর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তাতে নড়ে বসে প্রশাসন। কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়ার শাসপুরে তদন্তে যান পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার পরে কালনা ২ ব্লক প্রশাসনের তরফে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। এমন কাজ হয়ে থাকলে, তা অন্যায় হয়েছে, দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, একটি ঘরে নানা যন্ত্রপাতি বসিয়ে আধার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। সে জন্য মাথা পিছু পাঁচশো টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এই ভিডিয়ো দেখার পরেই শাসপুর খেলার মাঠে তৃণমূলের ছাত্র-যুব কার্যালয়ে তদন্তে যান মহকুমাশাসক (কালনা) সুরেশকুমার জগৎ, কালনা ২ বিডিও দেবলকুমার উপাধ্যায়, কালনা থানার ওসি রাকেশ সিংহেরা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তখন কার্যালয়টি বন্ধ ছিল। তবে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা আধিকারিকদের কাছে কী ভাবে আধার কার্ড তৈরি হচ্ছিল, সে বিষয়ে অভিযোগ জানান।
বিডিও বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি দেখার পরেই ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়েছিল। এলাকার অনেকেই নালিশ জানান, টাকা নিয়ে সেখানে আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছিল। আমরা পুলিশে লিখিত অভিযোগ করছি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’’ শাসক দলের কার্যালয়ে আধার কার্ড করাতে গিয়েছিলেন দাবি করে নয়ন বিশ্বাস নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘প্রয়োজন থাকার জন্যই কার্ড করাতে গিয়েছিলাম। ৫০০ টাকা নেওয়া হলেও, কোনও রসিদ দেওয়া হয়নি।’’
ওই কার্যালয়টি তাঁদের জানিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুব্রত দাসের দাবি, ‘‘এলাকায় একটি সাইবার ক্যাফেতে টাকা নিয়ে আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছিল। কিছু গরিব মানুষজনকে বিনা পয়সায় কার্ড করিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল ওই সাইবার ক্যাফের কর্মীদের কাছে। সে কাজের জন্যই তাঁদের দলের কার্যালয়ে জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা টাকা নিয়ে কাজ করবেন, এটা ভাবিনি!’’ সাইবার ক্যাফের কর্মীরা অবশ্য টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
কালনা ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল অনৈতিক কাজ সমর্থন করে না। বিষয়টি জানার পরে দল আলাদা তদন্ত করছে। গাফিলতি প্রমাণ হলে শাস্তি হবে।’’ কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের বক্তব্য, ‘‘দলীয় কার্যালয়ে যদি এমন কাজ হয়ে থাকে, ভুল হয়েছে। তবে সরকারি সংস্থা ছাড়া, আধার কার্ড করা যায় না। টাকা নিয়ে যারা কার্ড করছে, তারা কী ভাবে তা করছে, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।