Disergarh

জমি দখলের অভিযোগ পুর-প্রতিনিধির বিরুদ্ধে, বিক্ষোভ

বুধবার সকালে এলাকায় গিয়ে জানা গিয়েছে, সাঁকতোড়িয়ায় ওই জমিতে নিত্যদিনের বাজার বসে। বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় একশো বছর ধরে সেখানে বাজার বসছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডিসেরগড় শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২৫
Share:

এই জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র

সাধারণের ব্যবহৃত বাজারের একটি জমিতে অবৈধ উপায়ে পাঁচিল তুলে, তা দখল করার অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল পুর-প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। আসানসোল পুরসভার ডিসেরগড়ের ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। একে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত কয়েক দফা বিক্ষোভ হয়। জমি ‘দখলের’ প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বেরই একাংশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসিন্দাদের একাংশ পাঁচিল ভাঙতে শুরু করায় পুর-প্রতিনিধি বাধা দিলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে অবস্থা সামাল দেয়। তবে অভিযুক্ত পুর-প্রতিনিধির দাবি, ওই জমিটি তাঁর দাদার। সেটি দখল করা হয়নি। এ দিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে।

Advertisement

বুধবার সকালে এলাকায় গিয়ে জানা গিয়েছে, সাঁকতোড়িয়ায় ওই জমিতে নিত্যদিনের বাজার বসে। বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় একশো বছর ধরে সেখানে বাজার বসছে। ডিসেরগড়, ঝালবাগান সাঁকতোড়িয়া এলাকার বাসিন্দারা সেখান থেকে বাজার করেন। তাঁদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে তাঁরা হঠাৎই লক্ষ্য করেন, জমির কিছুটা অংশে সিমেন্টের স্তম্ভ ও পাটা বসিয়ে ঘিরে নেওয়া হচ্ছে। খোঁজ করে জানতে পারেন, স্থানীয় ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধি অঞ্জন মণ্ডলের উপস্থিতিতে ওই জমি ঘেরার কাজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরেই বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তবে রাতের মতো পরিস্থিতি শান্ত হলেও, বুধবার সকাল থেকে ফের উত্তেজনা শুরু হয়। জমি ‘দখলের’ খবর পাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই শতাধিক বাসিন্দা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। যুব তৃণমূল নেতা চন্দন আচার্যের দাবি, প্রায় ১০০ বছর আগে স্থানীয়দের জন্য বাজার বসাতে বেঙ্গল কোল কোম্পানি এই জমি দান করেছিল। সেই থেকে বাসিন্দারা এই জমি ব্যবহার করে আসছেন। চন্দনের অভিযোগ, “হঠাৎ দেখি সেই জমি দখল করার উদ্দেশ্যে এলাকার পুর-প্রতিনিধি পাঁচিল তুলছেন।” বলেন, “আমরা পাঁচিল ভেঙে ফের সেটি সাধারণের ব্যবহার করার ব্যবস্থা করেছি।”

Advertisement

বুধবার দেখা গেল, পাঁচিলের বেশির ভাগ অংশ ভাঙা। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। যাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ, সেই পুর-প্রতিনিধি অঞ্জন দাবি করেন, ১৯৮০ বেঙ্গল কোল কোম্পানি তাঁর মা ছবিরানি মণ্ডলকে ওই জমিটি যৎসামান্য ভাড়ায় ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল। ১৯৮৫-তে ছবিরানি তাঁর বড় ছেলে স্বপনকে ওই জমিটি ব্যবহার করার অধিকারসত্ত্ব দিয়েছিলেন। স্বভাবতই ওই জমির মালিক এই মুহূর্তে স্বপন। অঞ্জনের আরও দাবি, “দাদার অনুরোধেই জমিতে পাঁচিল তোলার কাজ দেখভাল করেছি।” এ দিন স্বপনের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়া হলে অঞ্জন জানান, তিনি অসুস্থ। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।

এ দিকে, এলাকারই প্রাক্তন পুর-প্রতিনিধি, বিজেপি নেতা অভিজিৎ আচার্য বলেন, “শতাধিক বছরের পুরোনো এই বাজারের জমি দখলের চেষ্টা করা হলে, আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।” অভিজিতের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বুঝে গিয়েছেন আর বেশিদিন তাঁরা ক্ষমতায় থাকবেন না। তাই এখন ‘লুটের’ রাজনীতি শুরু করেছেন। এ বিষয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement