ছটপুজোর সাহায্যে আবদুল্লারা

বারাবনির দোমোহানিতে এক সংখ্যালঘু পরিবারের পুকুরে প্রতি বছর সূর্যের আরাধনায় মেতে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

কুলটি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share:

নিয়ামতপুরে কামারবাঁধে পুজোর প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

ছট উৎসবে মাতবেন লালবাহাদুর সিংহ, রবি সিংহেরা। সে জন্য সকাল-সকাল পুকুর পরিষ্কার করে ঘাট বাঁধানো, আলোর ব্যবস্থা থেকে বিশ্রামকক্ষ তৈরিতে হাত লাগালেন নিয়ামতপুরের মহম্মদ আবদুল্লা, শেখ সইমেরা। বারাবনিতে প্রতি বছরের মতোই ফকির মণ্ডলের পুকুরে পালিত হল ছটপুজো। উৎসবে এমন সম্প্রীতির ছবি দেখা গেল নানা এলাকায়।

Advertisement

শনিবার সকালে কুলটির নিয়ামতপুরের কামারবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পুকুরের কচুরিপানা, ঘাস তুলে চার পাশ সাফ করা হয়েছে। মাটি, বালি, ইট সাজিয়ে ঘাট তৈরি করা হয়েছে। ছটের ব্রতীদের বিশ্রামের জন্য ম্যারাপ বাঁধা, পুকুরে যাতায়াতের রাস্তায় আলো লাগানো হয়েছে। বিকেলে সেই রাস্তা ধরেই পুকুরে গেলেন পুণ্যার্থীরা। তা দেখে হাসি ফুটেছে আবদুল্লা, সইমদের মুখে। তাঁদের কথায়, ‘‘ছোট থেকে এই পাড়ায় বাস। ধর্মের বিভেদ আমরা বুঝি না। সে নিয়ে মাথা ঘামানোরও সময় নেই। প্রতি বছরই এই কাজ করে খুব আনন্দ পাই।’’ সইমদের এই উৎসাহ দেখে খুশি রাজেশ সাউ, রবি সিংহেরাও। পাশাপাশি বসে পুজোর ফল ও ঠেকুয়া ভাগ করে খান তাঁরা। রাজেশ বলেন, ‘‘ভবিষ্যতেও আমরা এ ভাবেই এক সঙ্গে পথ চলতে চাই।’’

বারাবনির দোমোহানিতে এক সংখ্যালঘু পরিবারের পুকুরে প্রতি বছর সূর্যের আরাধনায় মেতে ওঠেন এলাকার বাসিন্দারা। এ বছরও তার অন্যথা হয়নি। কত বছর ধরে এই পুকুরে উৎসব পালিত হচ্ছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি ছটপুজো কমিটির সম্পাদক সুনীল শর্মা। তবে তিনি বলেন, ‘‘ওই পরিবারের সহযোগিতা আছে বলেই বছরের পর বছর এখানে পুজো দেওয়া যাচ্ছে।’’ কী ভাবে এই পুকুরে ছট উৎসব শুরু হয়েছিল। পুকুরের মালিক ফকির মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক বছর আগে এলাকার এক বিশিষ্ট ব্যক্তি পুকুরটি ছট উৎসবে ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানান। তাতে সম্মতি দিয়ে তখন থেকেই ছটের জন্য খুলে দিয়েছি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বরাবর বিতর্কে এই তৃণমূল কাউন্সিলর, এ বার পুলিশকর্মীকে প্রকাশ্যে খুনের হুমকি গুসকরার মল্লিকার!

ফকির জানান, প্রতি বছরই ছটপুজোর আগে-পরে তিনি ও তাঁর ছেলে আখতার দাঁড়িয়ে থেকে পুকুর পরিচর্যা করেন। তিনি বলেন, ‘‘আয়োজকেরা নিমন্ত্রণ না করলেও সময় পেলে পুজোর সময়ে ঘুরে দেখে যাই।’’ শনিবারও ছটের ঘাট ঘুরে দেখেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement