প্রতীকী ছবি।
কয়লা পাচার-কাণ্ডে ধৃত ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড লিমিটেড (ইসিএল)-এর সাত জন বর্তমান ও প্রাক্তন কর্তাকে পাঁচ দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠাল আদালত। বৃহস্পতিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী এই নির্দেশ দিয়েছেন।
সিবিআই সূত্রের খবর, বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে কোলের এই সাত ইসিএল আধিকারিককে বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে ডেকে অনেক ক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তাঁদের জবাবে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান ইসিএল আধিকারিক এসসি মৈত্র। পাশাপাশি, ইসিএলের তিন প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত ব্যানার্জি, অভিজিৎ মল্লিক এবং তন্ময় দাস। তন্ময় দাস আগে ইসিএলের প্রধান নিরাপত্তা আধিকারিক ছিলেন। এ ছাড়া ম্যানেজার নিরাপত্তা আধিকারিক ছিলেন মুকেশ কুমার। নিরাপত্তা আধিকারিক রিঙ্কু বেহেরা ও দেবাশিস মুখোপাধ্যায়।
সিবিআইয়ের দাবি, কয়লা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে এই অভিযুক্তদের। পাশাপাশি, তাঁদের অর্থ লেনদেনের বিভিন্ন তথ্য সিবিআই এর হাতে এসেছে। সরকারি আধিকারিও হয়েও অভিযুক্তেরা সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করার যথেষ্ট চেষ্টা করেননি বলে সিবিআইয়ের দাবি। বরং নিজেদের পদে থেকে বিভিন্ন ভাবে ব্যক্তিগত লাভের বিনিময়ে কয়লা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তদের সাহায্য করেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার আদালতে, অভিযুক্তদের আইনজীবীরা দাবি করেন, তাঁদের মক্কেলদের হিসাব বহির্ভূত কোনো সম্পত্তি বা অর্থের হদিস সিবিআই পায়নি। ধৃত তন্ময় দাসের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যন্ত চিঠি দিয়েছেন। সিআইএসএফ আধিকারিকদেরও বিষয়টি জানিয়েছেন। অর্থাৎ যা যা করণীয় সবই করেছেন। কিন্তু সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘অনুপ মাজির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ও অর্থ লেনদেনের বিভিন্ন তথ্য ও টাকা লেনদেনের একটি মেমো পাওয়া গিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বরে, ইসিএল-এর দু’জন জিএম, কয়লা মাফিয়া অনুপ মাজি (লালা)-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই বেআইনি কয়লা ব্যবসার মামলা করেছিল। এই ক্ষেত্রে, সিবিআই ইসিএল জিএম এ কে ধর, জেসি রাই, প্রধান নিরাপত্তা আধিকারিক তন্ময় দাস, কাজোরা এরিয়া সিকিউরিটি অফিসার দেবাশিস মুখোপাধ্যায় এবং কুনুস্তোরিয়া এরিয়ার নিরাপত্তা পরিদর্শক ধনঞ্জয় রাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। ধনঞ্জয় পরে মারা যান।