গ্যাসের জোগান পরিষেবা স্বাভাবিক। শুক্রবার দুর্গাপুরে। নিজস্ব চিত্র
জেলায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিএনজি গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পথে। শুক্রবার সকালে সিলিন্ডার ভর্তি ১৬টি গাড়ি রওনা দেয় বিভিন্ন এলাকায়। সব মিলিয়ে সপ্তাহ তিনেক পরে পরিষেবা ফের স্বাভাবিক হওয়ার পথে।
আসানসোলের কন্যাপুরে গ্যাস সংস্থার কার্যালয়ে আইএনটিটিইউসি-র আন্দোলনের জেরে জুনের শেষ থেকে সিএনজি গ্যাস সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয়। তার পরে থেকে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয় প্রশাসনিক স্তরে। কিন্তু অচলাবস্থা কাটেনি। মাঝে আসানসোলে সিএনজি মিললেও দুর্গাপুর-সহ অন্যত্র সিএনজি আসেনি। আসানসোল ও দুর্গাপুরের অটোচালকেরা আন্দোলন শুরু করেন। বুধবার দিনভর দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকার বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করেন অটোচালকেরা। আইএনটিটিইউসি নেতা তথা দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বিকেলে অটোচালকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে সমস্যার সমাধান করতে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে যান। পরে তিনি জানান, পুলিশ কমিশনার তাঁকে ফোনে জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরবরাহ চালু হয়ে যাবে। তার পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ অবরোধ তুলে নেন অটোচালকেরা। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের তরফে গ্যাস সংস্থাটিকে দ্রুত সমস্যা মেটানোর জন্য আবেদন করা হয়। দিল্লিতে গ্যাস সংস্থার আধিকারিকেরা উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে সরবরাহ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে দুর্গাপুরে সিএনজি সরবরাহ শুরু হয়। মেনগেট এলাকার ফিলিং স্টেশনটিতে বেশ কয়েকটি গাড়ি ঢোকে। শুক্রবার সকাল থেকে সেখানে গ্যাস নেওয়ার জন্য অটোর লম্বা লাইন লেগে যায়। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সিটি সেন্টারের ফিলিং স্টেশনে কোনও গ্যাসের গাড়ি ঢোকেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, মেনগেট এলাকার ফিলিং স্টেশনটিতে ‘বুস্টার কমপ্রেসার’ থাকায় তুলনায় বেশি গ্যাস মজুত করা যায়। সিটি সেন্টারের ফিলিং স্টেশনটিতে সেই ব্যবস্থা নেই। তাই সেখানে পরে গ্যাস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়ায় খুশি আসানসোল ও দুর্গাপুরের কয়েক হাজার অটো চালক। খুশি সিএনজি গাড়ির মালিকেরাও। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা আসানসোল ও দুর্গাপুর থেকে নিয়মিত সিএনজি চালিত বাস চালায়। গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন সংস্থার সেই সব বাসের চালকেরাও। বেসরকারি গ্যাস সংস্থা জানায়, নিরাপত্তার স্বার্থে গ্যাস সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত যে কয়েক জনকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তাঁরা জানিয়েছিলেন তা প্রশাসন মেনে নিয়েছে। তাই এখন আর গ্যাস সরবরাহ করতে কোনও অসুবিধা নেই। সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নিরাপত্তার বি আমরা কখনই আপোষ করি না। প্রশাসন সাহায্য করাতেই সিএনজি সরবরাহ শুরু করা সম্ভব হয়েছে।’’
ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়, জেলা প্রশাসনের সহোযোগিতায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা গিয়েছে।