সভায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
এ শহরে পর্যটকদের টানতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। বেশ কিছু খামতিও রয়েছে এখনও। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জোর দিলেন কালনার পর্যটনে।
শুক্রবার কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে প্রথম প্রশাসনিক সভা করেন তিনি। সেখান থেকেই প্রশংসা করেন এ শহরের পুরাকীর্তিগুলির। সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ২০২২ সালের মধ্যে ভাগীরথীর উপর দিয়ে কালনা ও নদিয়ার শান্তিপুরের মধ্যে সেতু নির্মাণ শেষ হয়ে যাবে। যাতায়াতের সুবিধা বাড়লে বাড়বে পর্যটকও।
১০৮ শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, গোপাল জিউ মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, ভবা পাগলার মন্দির, দাঁতনকাঠি তলার মসজিদের মত অজস্র পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে এ শহরে। যার টানে আসেন বিদেশিরাও। কিন্তু পরিচ্ছন্ন থাকা-খাওয়ার জায়গা, বড় গাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা, গাড়ি রাখার জায়গা বা রাস্তার মোড়ে দিকনির্দেশ না থাকার মতো অনেক খামতি এখনও রয়ে গিয়েছে। সে সব ঘাটতি পূরণ করা গেলে পর্যটকদের ঢল নামা যে নিশ্চিত, তা মনে করছেন পুরকর্তারা। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কালনার পুরসভাকে বলব এলাকাগুলো সুন্দর করে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন করে ভাল করে কাজ করতে হবে। এখানে ১০৬টা জলের প্রকল্প আছে। কলকাতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করুন, যাতে কলকাতার লোক কালনায় বেড়াতে এসে বলে কলকাতার চেয়ে কালনাটা ভাল। কাজের প্রতিযোগিতা হোক।’’
শহরবাসীরা প্রায়ই ছোট গলি, ঘিঞ্জি রাস্তায় চলাফেরা করতে অসুবিধের অভিযোগ তোলেন। টোটো, রিকশার ধাক্কা, গরুর ধাক্কায় ছোটখাট দুর্ঘটনার মতো ঘটনাও ঘটে। তা ছাড়া গলিতে জঞ্জাল জমে থাকা, নর্দমা সাফাই না হওয়ার মতো অভিযোগও রয়েছে। এ দিন অবশ্য পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাদ দাবি করেন, ‘‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শহরের সাফাইয়ে জোর দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর কথা মেনে শহরকে ঝকঝকে পরিষ্কার করার চেষ্টা করব।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগীরথীর উপরের সেতুর জন্য কালনার কোন মৌজার, কোন চাষির, কতটা জমি লাগবে তা নিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষা হয়ে গিয়েছে। জমি অধিগ্রহণের কাজও চলছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানান, সেতুর দু’পাশে জমি প্রয়োজন হয়। এ ব্যাপারে বাসিন্দাদের সাহায্যও চান তিনি।
শহরের উন্নয়নের কথায় খুশি বাসিন্দারা। কনক মুখোপাধ্যায় নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সেতু তৈরি হবে বলে দু’দশক ধরে শুনছি। ২০২২-এ কাজ শএষ হবে শুনে আনন্দ হচ্ছে।’’ আর এক বাসিন্দা গোপাল ঘোষ বলেন, ‘‘সেতুটি চালু হলে কালনার তাঁত শিল্প, ধান চালের ব্যবস্যার রমরমা দেখা যাবে। যোগাযোগ ব্যবস্থারও দারুণ উন্নতি হবে। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরে মনে হচ্ছে এ বার ভাল দিন আসতে চলেছে।’’