প্রতীকী ছবি।
দুই জেলার বিভিন্ন বহুতলে একা থাকেন বহু বৃদ্ধবৃদ্ধা। কোভিড-পরিস্থিতিতে তাঁদের অনেকেই ‘অসহায়’। তাঁদের সাহায্য করতে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ ও আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটকে উদ্যোগী হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন থানার সঙ্গে আবাসন কমিটির যোগাযোগ রাখা, ফোন নম্বর আদানপ্রদানের কথা বলা হয় মঙ্গলবারের ওই প্রশাসনিক বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পুলিশ-প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর ও জনপ্রতিনিধিরা এক সঙ্গে কাজ করলে শহরাঞ্চলে বয়স্ক, অসহায়দের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দাবি, ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকেই তারা ‘নমন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবীণ নাগরিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। প্রত্যেক থানার তরফে সেই এলাকার প্রবীণদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়। কেউ অসুস্থ হলে, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশের দাবি, শিল্পাঞ্চলের বহু পরিবারেই কর্মসূত্রে ছেলেমেয়েরা অন্য জায়গায় থাকেন। এই প্রকল্প ভরসা দেয় একাকী বাবা-মায়েদের। দুর্গাপুরের বিধাননগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের উদ্যোগে প্রবীণদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্যে ‘নমন এল্ডার কেয়ার’ও চালু করা হয়েছে। প্রবীণদের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে বাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ।
বেনাচিতির প্রবীণ বাসিন্দা হরিহর ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের মতো বয়স্কদের নমন প্রকল্প ভরসা জুগিয়েছে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘আবাসনের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আমরা এই কাজ বেশ কিছু দিন ধরে করছি।’’ মেয়রকেও নাম করে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দিয়েছেন, নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।’’
করোনা-কালে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশও খাবার-ওষুধ পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে বয়স্ক মানুষজনের। এর আগে পুজো বা উৎসবের সময়েও পুলিশ প্রবীণদের নিয়ে ঠাকুর দেখতে যাওয়া, বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ বার বহুতল, আবাসনের কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করে সাহায্য কী ভাবে করা হবে ঠিক করবে পুলিশ।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাউকে ভর্তি করার প্রয়োজন হলে আমাদের অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হবে। ভর্তির প্রয়োজন না হলে টেলি-মেডিসিনের সাহায্য নেওয়া হবে।’’ থানাগুলির কাছে আবাসনের কমিটির নম্বর, চিকিৎসকদের নম্বর রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, বিভিন্ন থানা এলাকায় প্রবীণদের জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, পুলিশ রয়েছে। কিন্তু বহুতল বা আবাসনগুলির জন্য আলাদা পরিকাঠামো করলে যৌথ ভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।