মালিকদের একাংশের মতে, ‘ফ্লাই অ্যাশ’ এনে ইট তৈরির বিষয়টি নিয়ে আরও কিছু সংশয়ের জায়গা রয়েছে। ফাইল চিত্র।
ইটভাটা শিল্পে মাটি নিয়ে সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে সোমবার। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী ভাটা মালিকদের ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ইট তৈরির জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু এ বিষয়ে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে বলেই মত কালনার ভাটা মালিকদের একাংশের।
এ দিন বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ভাটা মালিকদের তরফে শিল্পোদ্যোগী সুশীল মিশ্র বলেন, ‘‘গঙ্গা থেকে আগে পলি মিলত। কিন্তু এখন মাটির অভাবে ইটভাটা বন্ধের মুখে। একটা ভাটা ২৫০-৩০০ জনের কর্মসংস্থান করে।’’ সেই সঙ্গে তিনি প্রস্তাব দেন, ‘‘গঙ্গার চরের মাটি ইটভাটায় ব্যবহার করা গেলে সমস্যা মিটতে পারে।’’ বিষয়টি শুনেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, এটা করা যাবে না। কারণ, নিয়মের বেড়াজাল রয়েছে। তাঁর পরামর্শ, ‘‘ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক তৈরি করুন। নদী থেকে মাটি নয়। বিকল্প পথ ভাবতে হবে।’’ এর কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে সভায় জানানো হয়, ভাগীরথী থেকে মাটি তোলার বিষয়টি পোর্ট ট্রাস্টের বিষয়। সেই সঙ্গে জানানো হয়, ব্যান্ডেল থেকে ফ্লাই অ্যাশ আনা যাবে।
এর পরেই এই ‘বিকল্প পথের’ বাস্তবায়ন কতখানি সম্ভব, তা নিয়ে একাধিক ভাটা মালিক সংশয় প্রকাশ করেছেন। সভাতেই সুশীলবাবু জানান, কালনা থেকে ব্যান্ডেলের দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার। দূরত্বগত কারণেই সেই ‘ফ্লাই অ্যাশ’ আনা অনেক বেশি খরচ সাপেক্ষ। এ সব শুনে মুখ্যমন্ত্রীর অবশ্য আশ্বাস, ‘‘সরকার সহযোগিতা করবে।’’
ভাটা মালিকদের একাংশের মতে, ‘ফ্লাই অ্যাশ’ এনে ইট তৈরির বিষয়টি নিয়ে আরও কিছু সংশয়ের জায়গা রয়েছে। যেমন, প্রথমত, বর্তমান পরিকাঠামোয় ওই ধরনের ইট তৈরি সম্ভব নয়। প্রয়োজন প্রযুক্তিগত পরিবর্তন। দ্বিতীয়ত, কালনা-সহ জেলার নানা প্রান্তে এই ধরনের ইটের তেমন চাহিদা এখনও নেই।
সেই সঙ্গে তাঁদের আরও দাবি, ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানে’ ড্রেজিং করে চরের মাটি তোলা হলে, ভাটার মাটির সমস্যা যেমন মিটবে তেমনই, নদীর নাব্যতা বাড়বে। রাজস্ববৃদ্ধি ঘটবে সরকারেরও। তা ছাড়া নদী-চরগুলি যে ভাবে বাড়ছে তাতে কালনার অনেক ঐতিহ্যবাহী স্নান-ঘাটও হারিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কালনার বাসিন্দা কেশব সরকারের।