আহত সিপিএম সমর্থক।
দিন দুয়েক আগে সিপিএমের মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন গ্রামের কয়েকজন। তারপর থেকেই বচসা, ছোটখাট অশান্তি চলছিল। তার মধ্যেই হামলা চালিয়ে সিপিএমের পতাকা, পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাল্টা মারে জড়িয়ে পড়ে সিপিএম।
বৃহস্পতিবার, বাংলা বছরের প্রথম দিনেই আউশগ্রামের এড়ল গ্রাম প়ঞ্চায়েতের বাহাদুরপুরে ওই মার-পাল্টা মারে দু’পক্ষের ন’জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে জনা সাতেককে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তিও করানো হয়েছে। ঘটনার পরে দু’পক্ষই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। সিপিএমের তরফে নির্বাচন কমিশনের কাছেও অভিযোগ করা হয়েছে।
কিছুদিন আগেই ওই ব্লকের প্রতাপপুর, বেসরা প্রভৃতি গ্রামে ঘরছাড়াদের তৃণমূল সমর্থকদের ঘরে ফেরার নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ, সিপিএমের অত্যাচারেই গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তাঁরা। তার মধ্যেই আবারও দু’পক্ষের গোলমাল বাধে। সিপিএমের অভিযোগ, মঙ্গলবার দলের প্রচার মিছিলে পা মেলায় হাজরা পাড়ার কয়েক জন কর্মী-সমর্থক। পরে মিছিল শেষে ওই এলাকায় সিপিএমের পোস্টার, পতাকায় মুড়ে দেন তাঁরা। বুধবার রাতে তৃণমূলের কয়েকজন সেই পোস্টার, পতাকা ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বুঝে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাজরা পাড়া পাহারা দিতে শুরু করেন সিপিএমের কয়েকজন। অভিযোগ, সকালে ফের তৃণমূলের কয়েকজন ওই পাড়ায় এসে পোস্টার ছিঁড়তে শুরু করে। সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিবাদ করলে অবশ্য তারা সাময়িক ভাবে এলাকা ছাড়ে তারা। কিন্তু গোলমাল থামেনি।
বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি আহত সিপিএম কর্মী বুধন মাঝি, স্বপন হাজরাদের অভিযোগ, দুপুরে তৃণমূলের ২০-২৫ জন লোক সশস্ত্র অবস্থায় এসে ফের হামলা চালায়। টাঙি, শাবলের কোপে আমাদের ছ’জন আহত হন। আঘাত লাগে আরও তিন জনের। তাঁদের প্রথমে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চার জনকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পাল্টা আক্রমণ করে সিপিএম। তৃণমূলের অভিযোগ, পরিস্থিতি একটু ঠান্ডা হতেই লোকজন জোগাড় করে লাঠি, রড নিয়ে পাল্টা হামলা চালায় সিপিএম। তাতে তৃণমূলের তিন জন জখম হন। তাঁদেরও বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহত তৃণমূল সমর্থক দিলীপ হাজরার দাবি, ‘‘সন্ত্রাস করতেই এক দল লোক এনে হামলা চালায় সিপিএম।’’
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মজুমদারের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের দিন বুথ দখল করেছিল তৃণমূল। এ বার ভোটের এক সপ্তাহ আগে থেকেই সন্ত্রাস তৈরি করতে চাইছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ পাল্টা সন্ত্রাসের অভিযোগ আউশগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সুভাষ মণ্ডলেরও। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম এখনও সন্ত্রাস করছে। মারধর করছে।’’ নিজস্ব চিত্র।