গুলি কাণ্ডে ধৃত আরও এক। নিজস্ব চিত্র।
কখনও প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনো ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুন। আবার কখনও ডাকাতি করতে এসে বাধা পেয়ে একের পর এক গুলি। গত এক বছরে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে প্রকাশ্যে গুলি চলার অন্তত গোটা দশেক ঘটনা ঘটেছে। তার অনেকগুলির কিনারা করেছে পুলিশ। তবে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের এমন দাপাদাপি শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চিন্তায় পড়েছে পুলিশও। তবে পুলিশের দাবি, অপরাধ কড়া হাতে দমন করা হচ্ছে।
রবিবার রানিগঞ্জে সোনার বিপণিতে লুটপাটের পরে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হয়। সেখান থেকে পালিয়ে আসানসোলে মহিশীলায় পৌঁছে এক ব্যাঙ্ককর্মীকে গুলি করে তাঁর গাড়ি ছিনতাই করে পালায়। প্রায় দু’মাস আগে কুলটির চিনাকুড়িতে সুদ কারবারি উমাশঙ্কর চৌহানের অফিসে ঢুকে দিনেদুপুরে তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় দুষ্কৃতীরা। লোকসভা ভোটের মুখে এই ঘটনা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ ভিন্ রাজ্যের অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তার আগে সম্প্রতি আসানসোলের কুমারপুরে হোটেলের ঘর থেকে গুলিবিদ্ধ যুবকের দেহ উদ্ধার, জামুড়িয়া বাজার এলাকায় টোটো চালকের বিরুদ্ধে এলোপাথাড়ি গুলি চালানোর অভিযোগ, কুলটির চিনাকুড়িতে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে
সুদের কারবারির গুলিতে খুন হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাতেও ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা অভিযুক্তদের ধরে পুলিশ।
গত বছর জাতীয় সড়কে চন্দ্রচূড় মন্দিরের কাছে এক ঠিকাদারের গাড়ির দিকে গুলি চলে। সেই ঘটনায় কয়লার কারবারে অভিযুক্ত জয়দেব মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তার আগে সালানপুরের একটি পেট্রল পাম্পে মোটরবাইকে তেল ভরতে এসে তিন দুষ্কৃতী টাকা না দিতে চেয়ে আগ্নেয়াস্ত্র বার করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এ ছাড়া গাড়ি
নিয়ে যাওয়ার সময়ে ব্যবসায়ী তথা বিজেপি নেতার দিকে গুলি চালানো, হোটেলে বসে থাকা মালিককে গুলি করে খুনের মতো নানা ঘটনা ঘটেছে। হোটেল মালিক খুনে আততায়ীরা এখনও অধরা।
গত এক বছরে এমন ঘন ঘন গুলি চলার ঘটনায় শিল্পাঞ্চলের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তায় বাসিন্দাদের অনেকে। তঁদের মতে, প্রকাশ্যে গুলি চললে সাধারণ বাসিন্দাদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিজেপির জে লাসভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা পুলিশকে দিয়ে দলেরএত কাজ করান যে তাঁরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় পাচ্ছেন না।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূল পুলিশকে পরিচালনা করে না। পুলিশ স্বাধীন ভাবে কাজ করে বলেই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে।’’ পুলিশের অবশ্য দাবি, শহরে অপরাধের ঘটনা ঘটলেও, প্রায় সবগুলিরই কিনারা হচ্ছে। এলাকার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।