বর্ধমানের গির্জায় বড়দিনের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র।
বড়দিনের উৎসবেও করোনার থাবা। এ বার বেশ কিছু অনুষ্ঠান কাটছাঁট করা হয়েছে বর্ধমানের গির্জাগুলিতে। অন্য বছরের মতো গির্জায় গিয়ে গোলাপ বা মোমবাতি দিতে পারবেন না সাধারণ মানুষজন। মধ্যরাতের প্রার্থনাও বাতিল করা হয়েছে শহরের গির্জাগুলিতে।
বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলা বাজার লাগোয়া ক্যাথলিক গির্জায় অন্য বছর বড়দিনের আগের দিন রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলত প্রার্থনা। কিন্তু করোনার কারণে এ বার তা বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ফাদার উইলসন জানান, পরিবর্তিত সময় অনুযায়ী, বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মাস্ক পরে ও দূরত্ব-বিধি বজায় রেখে প্রার্থনাসভা করা হবে। গির্জার তরফে মার্টিন বেরা জানান, প্রার্থনায় ঢোকার আগে প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা ‘থার্মাল গান’ দিয়ে পরীক্ষা-সহ যাবতীয় করোনা-বিধি মানা হবে।
বর্ধমানের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটের পাশেই রয়েছে প্রোটেস্ট্যান্ট গির্জা। দিন কয়েক আগে থেকেই বড়দিনের সমস্ত উৎসব বাতিল ঘোষণা করে নোটিস টাঙানো হয়েছে গির্জার গেটে। গির্জার তরফে বিকাশ মল্লিক, বিধান মল্লিকেরা জানান, বড়দিনে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিশেষ প্রার্থনাসভা ছাড়া, বাকি সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। প্রতি বছর যে মেলা বসে, তা-ও বন্ধ রাখা হয়েছে। দু’টি গির্জাতেই প্রতি বছর বিকেলের পর থেকে বহু মানুষ লাইন দিয়ে ঢুকতেন। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতি মাথায় রেখে এ বার তা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বর্ধমান শহরের লাকুরডির টেরেসা হাউসে বড়দিন উপলক্ষে প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠান হয়। এ বছর প্রার্থনাসভা ছাড়া, বাকি সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। একই রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে লাকুরডি ক্যাথলিক গির্জাতেও। ওই গির্জার তরফে সুনীল কুমার জানান, দূরত্ব-বিধি বজায় রেখে ও মাস্ক পরে প্রার্থনাসভায় যোগ দেওয়া ছাড়া, এ বার তাঁরা সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন।
শহরের গির্জাগুলির আশপাশে বড়দিন ও তার আগের দিন মোমবাতি, গোলাপ-সহ নানা জিনিসের পসরা নিয়ে বসতেন কিছু ব্যবসায়ী। জমে উঠত বিক্রিবাটা। উৎসব বাতিল হওয়ায় সেই বিক্রিতে মন্দা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন ওই ব্যবসায়ীরা।