—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দীর্ঘদিন ধরে পাণ্ডবেশ্বরের ১৪৪ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খাবার পাচ্ছেন না মা ও অন্তঃসত্ত্বারা, এমনই অভিযোগ উঠেছে। শনিবার অভিযোগের তদন্তে যুগ্ম-বিডিও (পাণ্ডবেশ্বর) এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সুপারভাইজ়ার (পাণ্ডবেশ্বর ব্লক) কেন্দ্রটি ঘুরে দেখলেন। সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী জানিয়েছেন, এখানে গত ১২ বছর ধরে তিনি একাই রয়েছেন। তাঁর পক্ষে রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিডিও (পাণ্ডবেশ্বর) মহাশ্বেতা বিশ্বাস জানান, দীর্ঘদিন খাবার মিলছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করছিলেন। তার পরেই এ দিন তদন্ত হয়। নরেন্দ্রনাথ বলেন, “এলাকাবাসী আমার কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।” খাবার না মেলায় সমস্যায় পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা ও শিশুরা। অভিভাবক ডলি বিবি, উজলা বেবি সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পেট ভরে খেতে পেত ছেলেমেয়েরা। দীর্ঘদিন তা হচ্ছে না। সমস্যায় পড়ছি আমরা সবাই।”
নির্দিষ্ট করে কত দিন খাবার মিলছে না, তা নিয়ে অবশ্য নানা মত উঠে এসছে। কেন্দ্রটির কর্মী মিনতি রুইদাস সংবাদমাধ্যমের একাংশের সামনে এক বার বলেছেন দেড় মাস। এক বার বলেছেন ছ’মাস এই পরিস্থিতি চলছে। আবার, সিডিপিও (পাণ্ডবেশ্বর) পাপাই বিশ্বাস জানান, এক মাস ধরে এই পরিস্থিতি চলছে।
কেন এই হাল? নরেন্দ্রনাথের দাবি, মিনতি তাঁকে জানিয়েছেন, তিনি রান্না করে খাওয়াতে পারবেন না। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সুপারভাইজ়ার (পাণ্ডবেশ্বর) দোলনচাঁপা বিশ্বাস জানান, মিনতির বিরুদ্ধে একাধিক বার স্থানীয় বাসিন্দারা খাবার না দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন। মিনতিকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হলে, তিনি জবাবে জানান, রান্না করতে পারবেন না। এ দিকে, মিনতি সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জানিয়েছেন, ২০১১ থেকে তিনি এখানে একাই কাজ করছেন। সহায়িকা কর্মী নেই। রান্নাঘর অপরিচ্ছন্ন থাকছে। মোট ৮৪ জন শিশু ও অন্তঃসত্ত্বাকে এখান থেকে খাবার দেওয়া হয়। তিনি নিজের বেতন থেকে মাসে ৭০০ টাকার বিনিময়ে এক জন কর্মী রেখেছিলেন। মিনতি বলেন, “যাঁকে বেতন দিয়ে রেখেছিলাম, তিনিও কাজ করতে চাইছেন না। ফলে, আমি একা রান্না করে খাবার দিতে পারব না বলে কর্তৃপক্ষকে
জানিয়েছি।”
কেন মাত্র এক জন কর্মী ওই কেন্দ্রে? অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মী অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিম বর্ধমানের আহ্বায়ক রুমু বক্সীর বক্তব্য, “২০১২-১৩ অর্থবর্ষে একটি মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। তার পরে, আদালত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নিয়োগ নিয়ে স্থগিতাদেশ দেয়। জেলার বেশ কিছু জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কর্মী নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। অনেক জায়গাতেই মাত্র এক জন কর্মী
কাজ করছেন।”
এই পরিস্থিতিতে এ প্রশ্নও উঠছে, কেন এত দিন ধরে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলেও, ডিপিও (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু পৌরাণিক ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত মেসেজের উত্তর দেননি।