—প্রতীকী চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নবান্নে বৈঠকের পরেই ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর প্রশাসনিক জটিলতা কেটে গেল। আজ, বুধবার থেকে ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠাতে অসুবিধা হবে না প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের। কিন্তু প্রশ্ন হল, চড়ে থাকা আলুর দাম কি মধ্যবিত্তের নাগালে আসবে, না কি ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠাতে গিয়ে দাম আরও বেড়ে যাবে? নবান্ন সূত্রে জানা যায়, বাজার স্থিতাবস্থা না এলে ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে এক সপ্তাহ পরে ফের পুনর্মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর দাবিতে আলু ব্যবসায়ীরা বেশ কিছু দিন ধরেই আন্দোলন করছেন। সোমবার থেকে কর্মবিরতির পথেও হাঁটেন। তবে মঙ্গলবার নবান্নে বৈঠকের পরে ব্যবসায়ীরা কর্মবিরতি তুলে নিয়েছেন। রাত থেকেই আলু বার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সংগঠনের রাজ্যের সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমানের সম্পাদক জগবন্ধু মণ্ডল বলেন, “বাজারে নিয়ন্ত্রণ থাকলে পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন হবে না।” ওই সংগঠন সূত্রে জানা যায়, আড়তদার বা মজুতদারদেরও দাম নিয়ন্ত্রণ রাখার পরামর্শ দেওয়া হবে।
বৈঠকে ঠিক হয়েছে, হিমঘর থেকে দক্ষিণবঙ্গের ব্যবসায়ীরা ২৫ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবেন। আর উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা ২৬ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবেন। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, মুখ্যসচিব, কৃষি বিপণন সচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা, আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও হিমঘর ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা
নবান্ন সূত্রে জানা যায়, বৈঠকের শুরুতেই ভিন্ রাজ্যে আলু না পাঠালে কী কী অসুবিধা হতে পারে তা ব্যাখা করেন ব্যবসায়ীরা। আলু পাঠানো হলেও বাংলার বাজারে জোগানের অভাব হবে না বলে জানান। নবান্ন সূত্রে খবর, এরপরেই দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গ থেকে ১ লক্ষ টন করে, মোট ২ লক্ষ টন আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠানোর অনুমতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। সীমান্তে পুলিশ নজরদারি চালাবে।
কর্মবিরতির জেরে বর্ধমানের বাজারে জ্যোতি আলু ৩৫ টাকা ও চন্দ্রমুখী আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। ক্রেতাদের দাবি, সরকার আর আলু ব্যবসায়ীদের টানাপড়েনে বাজারে দাম বাড়ছে। তবে ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানোর জটিলতা কাটার পরে বাজারে ভাল মানের আলু পাওয়া যাবে কি না, দামই বা কেমন হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রথম সাতদিন হয়তো কিছু হবে না। কিন্তু পরের দিকে খারাপ আলুর সঙ্গে ভাল আলু মিশিয়ে দেবেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে চাহিদা তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টাও হবে, দাবি তাঁদের।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের জেলার সভাপতি উত্তম পাল বলেন, “খোলা বাজারে কী দামে বিক্রি হবে, সেটা বলতে পারব না। হিমঘরের ফটক থেকে কী দামে আলু বিক্রি করব, সেটা জানানো হয়েছে।”