নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
বন দফতরের কাজে গতি আনতে ও লোকালয়ে হাতির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা বাড়াতে চার জন মুখ্য বনপালের দফতর কলকাতা থেকে জেলায় স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। চার মুখ্য বনপালের দফতরের একটি পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ও বাকি তিনটি পশ্চিম বর্ধমানে সরিয়ে আনা হচ্ছে।
মুখ্য বনপাল পশ্চিমাঞ্চল চক্র, দক্ষিণ-পশ্চিম চক্র, দক্ষিণ-পূর্ব চক্র ও সেন্ট্রাল চক্র, এই চার জনের দফতর কলকাতা থেকে জেলায় স্থানান্তরিত হচ্ছে। মুখ্য বনপালের (পশ্চিমাঞ্চল চক্র) দফতর তৈরি হবে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। আসানসোলে স্থানান্তরিত হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিম চক্রের মুখ্য বনপালের দফতরটি। বাকি দুই মুখ্য বনপালের দফতর স্থানান্তরিত হচ্ছে দুর্গাপুরে। ১ ডিসেম্বর থেকে জেলায় দফতরের কাজ শুরু হবে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বন দফতরের অতিরিক্ত সচিব ইন্দিবর পান্ডে, বনরক্ষী বাহিনীর প্রধান নরেন্দ্রকুমার পান্ডে-সহ দফতরের অন্য আধিকারিকেরা পশ্চিম বর্ধমানে আসেন। সার্কিট হাউসে তাঁরা জেলা প্রশাসন, পূর্ত দফতর ও সংশ্লিষ্ট অন্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলে বন দফতরের নিজস্ব জায়গা না থাকায় মুখ্য বনপালের দফতরের ভবন তৈরি করতে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছে জমি নেওয়া হবে। তবে দুর্গাপুরে বিধাননগরের স্টিল পার্ক থেকে আড়রা মোড় পর্যন্ত এলাকায় বন দফতরের নিজস্ব জমি রয়েছে। সেখানেই দফতরের নতুন ভবন ও কর্মী-আধিকারিকদের আবাসন তৈরি করা হবে। যদিও সেই জমিতে কিছু জবরদখল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তা উচ্ছেদ করার কথা জানিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। তবে নতুন ভবন তৈরি হতে সময় লাগবে। এর জন্য আপাতত আসানসোল ও দুর্গাপুরে ওয়েবেল আইটি পার্কে দফতর চালু হবে।
কিন্তু কেন এই দফতর স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত? বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে শুরু করে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই বর্ধমান হয়ে বীরভূম পর্যন্ত এলাকায় হাতির উপদ্রব আগের থেকে বেড়েছে। অনেক সময় হাতি নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। ফসল, সম্পত্তিহানির পাশাপাশি প্রাণহানিও ঘটে।
বন দফতরের কর্তাদের মতে, অনেক সময় ‘কমিউনিকেশন গ্যাপ’ বা অন্য কারণে হাতিকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হবে কি না বা কখন ছোড়া হবে, এমন সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেত। নতুন ব্যবস্থায় কাজে সুবিধা হবে বলে দাবি তাঁদের।
ডিএফও (দুর্গাপুর) মিলনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাছেই থাকবেন। মাঝেসাঝে দফতরের কাজে আমাদের কলকাতায় যেতে হয়। তার আর দরকার হবে না। সব সময় জেলাতেই থাকব আমরা। এ ছাড়া যে কোনও সিদ্ধান্তের জন্য যে কোনও সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। সব মিলিয়ে কাজে গতি আসবে।’’