—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP
টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে গলসি ১ ব্লকের বুদবুদের সোনারতরী মহিলা কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের একাংশের বিরুদ্ধে। বিডিও এবং জেলাশাসকের কাছে এ নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছেন বোর্ডের সদস্যদের একাংশ। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সম্পাদিকা নিতু ম্যাকাঞ্জি ও সভানেত্রী রুমা রুইদাস। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, এটি সমবায়ের কোঅর্ডিনেটর সান্ত্বনা রুইদাসের স্বামী সুকুমার রুইদাসের চক্রান্ত। তিনি বোর্ড সদস্যদের কয়েক জনকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন। অন্য দিকে, তৃণমূলের একাংশের দাবি, অভিযোগের পিছনে রয়েছে দলীয় কোন্দল।
সমবায় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোসাইটির সদস্য সংখ্যা কম-বেশি ৩২০। তাঁরা সকলেই কোনও না কোনও মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। সেই গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ দেয় সমবায়। ২০০৯-এ বুদবুদ গ্রামে সমবায়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন নাম ছিল সোনারতরী সঙ্ঘ। পরে ২০১৬ সালে নাম বদলে হয় সোনারতরী মহিলা কোঅপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড। এক জন কোঅর্ডিনেটর-সহ চার জন কর্মী রয়েছেন সেখানে।
সমবায়ের বোর্ড সদস্যদের দায়ের করা অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, গত এপ্রিল থেকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সোসাইটির আয় হয়েছে ৩০ লক্ষ ৮৯ হাজার ১১৯ টাকা। এই সময়ে একটি কক্ষ, একটি বারান্দা ও রান্না ঘরের দেওয়াল প্লাস্টার হয়েছে। তাতে যা খরচ হয়েছে, তার ১৬ লক্ষ টাকা সভানেত্রী ও সম্পাদক নিজের ও তাঁদের আত্মীয়েরা সোসাইটির অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিয়েছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, “সভানেত্রী ও সম্পাদক দুর্নীতি করছেন। তাঁরা গোষ্ঠীর হিসাব দিচ্ছেন না। নিয়মিত সমবায় খোলে না।”
যদিও সভানেত্রী ও সম্পাদকের দাবি, “সমবায়ের কোঅর্ডিনেটরের স্বামী সুকুমার রুইদাস প্রভাব খাটিয়ে মহিলা সমবায় থেকে ২ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন। স্ত্রীকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ করিয়েছেন। এই সব কারণে তাঁর সঙ্গে সমবায় সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। সেই আক্রোশ থেকেই বোর্ডের কয়েক জন সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করাচ্ছেন।” স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ বলছেন, সমবায়ের কোঅর্ডিনেটর সান্ত্বনা। তাঁকে সামনে রেখে এক সময় সমবায় পরিচালনা করতেন তাঁর স্বামী সুকুমার। তিনি আবার তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেনের অনুগামী বলে পরিচিত। অন্য দিকে, সমবায়ের বর্তমান বোর্ডের সভানেত্রী ও সম্পাদিকা বুদবুদ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডুর ঘনিষ্ঠ। এখন রুদ্রপ্রসাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সমবায়টি। তাঁর সঙ্গে সুকুমারের ‘দ্বন্দ্ব’ দীর্ঘদিনের।
রুদ্রপ্রসাজ ও সুকুমার অবশ্য দ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি। সুকুমার বলেন, “বোর্ডের সদস্যেরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। সেখানে আমার কী করার আছে?” তাঁর দাবি, ‘‘আমাকে ঋণ নেওয়া হয়েছে সমবায়ে রেজুলেশন করেই। স্ত্রীর নিয়োগ হয়েছে আইন মেনেই।’’ রুদ্রপ্রসাদ বলেন, “আমরা চাই,অভিযোেগর তদন্ত হোক। দোষীরা শাস্তি পাক।” বিডিও (গলসি ১) জয়প্রকাশ মণ্ডল বলেন, “সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”