ছবি: সংগৃহীত।
কেষ্টর হুমকির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত নড়েচড়ে বসল পুলিশ-প্রশাসন। আউশগ্রামে তৃণমূলের যুব নেতা চঞ্চল বক্সী খুনের ঘটনায় আটক করা হল এলাকারই শাসকদলের যুব নেতা-সহ তাঁর এক ছায়াসঙ্গীকে। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি পুলিশ। যুব নেতার পরিবারের অবশ্য দাবি, সন্দেহের বশেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় দলীয় নেতাকে আটকের কথা জানেন না বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চঞ্চল বক্সী খুনেরর মামলায় শনিবার বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের এক যুব তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। চঞ্চলকে যে সুপারি কিলারদের দিয়েই খুন করা হয়েছে, তা একপ্রকার নিশ্চিত বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। এমনকি, এই খুনের পিছনে তৃণমূলেরই কারও হাত রয়েছে বলেও ঘটনার দিন থেকেই এলাকায় জল্পনা শুরু হয়েছিল। চঞ্চলের বাবা তথা দেবশালা পঞ্চায়েত প্রধান শ্যামল বক্সীর দাবি, বিজেপি বা বিরোধীরা কেউ তাঁর ছেলেকে খুন করেনি। তবে ধৃতের বাবার পাল্টা দাবি, “শুধুমাত্র সন্দেহের বশে আমার ছেলেকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গিয়েছে। চঞ্চলের সঙ্গে আমার ছেলের সুসম্পর্ক ছিল। আমার ছেলে এই ঘটনায় জড়িত হলে খুনের পর বাড়িতে কেন থাকবে?” যদিও এলাকার এক তৃণমূলের নেতার অভিযোগ, “পুলিশ যাদের আটক করেছে, তারা চঞ্চল বক্সীর বিরোধী ছিল। ওরাই এই খুনের ঘটনায় মূল চক্রী।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গেরাই গ্রাম থেকে শ্যামলকে মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন দেবশালা অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি চঞ্চল বক্সী। তাঁকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলিচালনা করা হয়। ওই ঘটনার পর থেকে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
বৃহস্পতিবার নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের উদ্দেশে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা আউশগ্রাম বিধানসভার দলীয় পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল। তিনি সাফ বলেছিলেন, “১৫ দিনের মধ্যে অপরাধীকে গ্রেফতার করা না হলে ভয়ঙ্কর খেলা খেলে দিয়ে যাব।” ঘটনাচক্রে, অনুব্রতর সেই হুঁশিয়ারির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আটক হলেন দু'জন।
শনিবার এলাকার এক যুব তৃণমূল নেতা ও তাঁর ছায়াসঙ্গীকে আটক করা হলেও তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ আউশগ্রাম-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুলিশকর্তারাও। পূর্ব বর্ধমান জেলার ডিএসপি (ডিএনটি) সৌরভ চৌধুরী বলেন, “তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সময় এলে সব জানানো হবে।” জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেনের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।