বাঁ দিকে, কালনায় নেতাজির মূর্তিতে মালা তৃণমূল বিধায়ক স্বপন দেবনাথের। ডান দিকে, বর্ধমানে বিজেপি যুব মোর্চার মোটরবাইক মিছিল। অনেকের মুখেই মাস্ক ও মাথায় হেলমেট দেখা গেল না। নিজস্ব চিত্র।
কেউ মোটরবাইক মিছিল, কেউ প্রভাতফেরি, কেউ আবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান— নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী পালন করল নানা রাজনৈতিক দল। ভোটের আগে নেতাজির জন্মদিন পালনে বিভিন্ন পক্ষের বাড়তি উদ্যম দেখা গিয়েছে, দাবি জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের অনেকের।
শনিবার বর্ধমানে জেলা তৃণমূল অফিসে নেতাজিকে স্মরণ করা হয়। শহরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডেও দিনটি পালন করা হয় দলের তরফে। গুসকরা শহর তৃণমূলের অফিসেও নেতাজির জন্মদিন পালিত হয়। মঙ্গলকোটের পালিগ্রামে মোটরবাইক মিছিল করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। পূর্বস্থলী দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বেশ কয়েকটি জায়গার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কালনায় নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত জ্ঞানানন্দ মঠের অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। ধাত্রীগ্রামে সুভাষ উৎসবের শোভাযাত্রায় ছাত্রছাত্রী, বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী স্বপনবাবু-সহ শাসক দলের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী।
নেতাজির জন্মদিনটি ‘পরাক্রম দিবস’ হিসেবে পালন করতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় মোটরবাইক মিছিল করল বিজেপি। দলের বর্ধমান সদর জেলা যুব মোর্চার ডাকে জেলা (সদর) কার্যালয় থেকে মোটরবাইক মিছিল করা হয় জিটি রোডে। কাটোয়ার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শপল্লিতে পতাকা উত্তোলন, হাসপাতাল পাড়ায় দলের নগর অফিসে অনুষ্ঠানের পরে, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে শহরে মোটরবাইক মিছিল করা হয়। বিকেলে অগ্রদ্বীপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। ছিলেন বিজেপির জেলা (কাটোয়া) সহ-সভাপতি অনিল দত্ত। মঙ্গলকোটের বিজেপি নেতা রানাপ্রতাপ গোস্বামী দাবি করেন, ‘‘আমরা রামনগর গ্রামে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য কর্মীদের জমায়েত হতে বলেছিলাম। তার আগে শক্তি প্রদর্শন করতে তৃণমূল কার্যত হুমকি দিয়ে বাইক মিছিল করেছে।’’ তবে তা মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। কালনা শহরে প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিজেপির তরফে ছোট ছোট অনুষ্ঠান করা হয়। সিমলন গ্রামে একটি সংগঠনকে ধামসা-মাদল কেনার জন্য অর্থ তুলে দেন গত লোকসভা ভোটে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাস।
ডিওয়াইএফের তরফে কালনার হাটকালনা পঞ্চায়েতের নিভুজি মোড়ে প্রভাতফেরি ও অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সংগঠনের তরফে আশাকর্মী, অটোচালক, খেতমজুর-সহ বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মানুষজনের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। খণ্ডঘোষে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফের তরফে ‘দেশপ্রেম দিবস’ পালন করা হয়। মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ে কংগ্রেসের তরফে রক্তদান শিবির করা হয়।
সামনে ভোট, সে কারণেই কি নেতাজি স্মরণে এত কর্মসূচি? তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর বক্তব্য, ‘‘আমরা প্রতি বছরই দিনটি পালন করি, বিজেপির মতো রাজনীতি করি না।’’ বিজেপির জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দীর দাবি, ‘‘আমরা অনেক দিন ধরেই মনীষীদের জন্মভিটেতে গিয়ে তাঁদের সম্মান জানাচ্ছি। সারা বছর ধরেই তাঁদের স্মরণ করি। ভোটের জন্য বিজেপি রাজনীতি করে না।’’